চিরায়ত বাংলার সবচেয়ে অন্যতম ও বড় পাওয়া হচ্ছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক রূপলাবণ্য। এমনই রূপ ও লাবণ্যে সমৃদ্ধ সিলেটের সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাট উপজেলায় রয়েছে একাধিক নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র।
যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মেঘালয় পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত প্রকৃতিকন্যা জাফলং। যেখানে আকাশসম উচুতে ঠাই দাঁড়িয়ে রয়েছে মেঘালয় পাহাড়। আর ওই পাহাড়ের বুকে চেপে ছাই বরণ মেঘমালা খানিকটা পর পর রঙ বদলাচ্ছে।
জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ভারতের ওমগট নদীর উপর ঝুলন্ত ব্রিজ, বালি ও পাথরের উপর দিয়ে বহমান স্বচ্ছ জলের স্রোতধারা, সমতল ভূমির চা বাগান ও খাসিয়া পল্লীর সৌন্দর্যের সঙ্গে প্রকৃতির সুনিপূন হাতের তৈরী ছায়া সুনিবিড় চির সবুজের পাহাড়ের বুক থেকে স্বচ্ছ জল রাশির মায়াবী ঝর্ণা ভ্রমণ পিপাসুদের ভ্রমণের তৃষ্ণা যেন আরও বাড়িয়ে দেয়।
তবে, বর্ষায় ভরা যৌবন থাকলেও ষর ঋতুর এ দেশে ঋতু ভেদে পাল্টে যায় মায়াবী ঝর্ণার রূপ। গ্রীষ্ম, বর্ষা এবং শরতকালে প্রাণের সঞ্চার হলেও হেমন্ত, শীত ও বসন্ত ঋতুতে বৃষ্টিপাত না থাকায় মায়াবী এ ঝর্ণায় জলের দেখা মেলা ভার।
তবে এ বছর চৈত্রের মাঝামাঝি সময় থেকে মেঘালয়ে অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে সময়ের আগেই যেন মায়াবী ঝর্ণা তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মায়াবী ঝর্ণা ফিরেছে তার মোহনীয় রূপে। যদিও রমজান মাস চলমান থাকায় বর্তমানে জাফলংয়ে পর্যটকের তেমন একটা সমাগম নেই।
হাতে গোনা কিছু পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও মায়াবী ঝর্ণার মোহনীয় রূপে মুগ্ধ হয়ে স্থানীয় এলাকার লোকজন প্রতিনিয়তই ঢু মারছেন। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রবাস ফেরত দুই স্বজন নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে রিপন ও রুবেল নামে দুই পর্যটক এসেছেন মায়াবী ঝর্ণা দেখতে।
মায়াবী ঝর্ণার সৌন্দর্য অবলোকন শেষে তারা জানান, এখন রমজান মাস। তেমন একটা কর্মব্যস্ততা না থাকায় অনেকটা অলস সময় পার করছি। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা জাফলংয়ের মায়াবী ঝর্ণা দেখতে এসেছি।
প্রকৃতির আপন মহিমায় গড়ে উঠা সবুজের এই সমারোহ এবং পাহাড়ের গাঁ থেকে ঝর্ণাধারা এর সব কিছই এত ভালো লেগেছে যে বলে বুঝাতে পারবোনা। শুধু তাদের কাছে নয়, সব মানুষের কাছেই মায়াবী ঝর্ণার মোহনীয় এই রূপ ভালো লাগার দাবী রাখে বলে তারা জানিয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যকর্মী মিনহাজ মির্জা ও নাজিম উদ্দিন জানান, বাড়ির কাছে এমন সুন্দর দৃশ্যপট যা যত দেখি ততই ভাল লাগে।
ঝর্ণার জলে গোসল করে অনেকটা আত্মতৃপ্তি পাই। আর তাইতো সময় সুযোগ পেলেই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মায়াবী ঝর্ণায় ঘুরতে আসি। পর্যটন কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ইনচার্জ (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, মেঘালয়ে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার একটু আগেই মায়াবী ঝর্ণায় জলের সঞ্চার হয়েছে। বর্ষার আগেই মায়াবী ঝর্ণা ফিরে পেয়েছে তার স্বকীয় সৌন্দর্য।
প্রকৃতির আপন মহিমায় গড়ে উঠা এই জায়গায় আসলে বোধ করি শত পরিশ্রান্ত, ক্লান্ত এবং বিষাদে ভরা মন-প্রাণ নিমিষেই জুড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে রমজান মাস থাকায় পর্যটকের সমাগম অনেকটা কম হলেও ঈদ পরবর্তী দিনগুলোতে পর্যটকের পদচারণায় আবারও মুখর হয়ে উঠবে জাফলং।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেঘালয় পাহাড় যেন আকাশসম উচুঁতে দাড়িয়ে আছে। আর সেই পাহাড়ের বুক থেকে স্বচ্ছ জল রাশির বিশাল ঝর্ণাধারা মেঘালয় রাজ্যর উমশিং পুঞ্জির পাশ দিয়ে আছড়ে পড়ছে পিয়াইন নদের বুকে।
জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ডাউকি নদী পাড় হয়ে পুরাতন সংগ্রাম পুঞ্জি এলাকা যাওয়ার পরই শুনতে পাওয়া যায় এই ঝর্ণার শো শো শব্দ। সেখান থেকে পিয়াইন নদের বালুচর ধরে খানিকটা পশ্চিম উত্তর দিক দিয়ে হাটলেই চোখে পড়বে এমন চোখ ধাধানো দৃশ্যের মায়াবী ঝর্ণা।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net