গণমাধ্যমকর্মীদের ছুটি, বেতন , দাবি নিষ্পত্তির বিধান রেখে সংসদে বিল

সিলেট সান ডেস্ক :: || ২০২২-০৩-২৮ ১৭:১৪:২৬

image
গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন পরিশোধ, ছুটি নির্ধারণ এবং দাবি নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে আদালত গঠনের বিধান রেখে করা নতুন আইন জাতীয় সংসদে বিল হিসেবে উত্থাপন করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সোমবার ‘গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ শীর্ষক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা আছে, গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন সাংবাদিক, কর্মচারী এবং নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানাসহ নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ বলা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি বিভাগ করা হয়েছে এই বিলে। সেগুলো হলো- অস্থায়ী বা সাময়িক, শিক্ষানবিশ এবং স্থায়ী। বিলে বলা হয়েছে, কেনো গণমাধ্যমকর্মীর বেতনকাল এক মাসের বেশি হবে না। পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিনের মধ্যে তাকে বেতন পরিশোধ করতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো (ওয়েজ বোর্ড) প্রতি পাঁচ বছর পর পর সংস্কার হবে। ওয়েজ বোর্ড সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও নিবদ্ধিত অনলাইন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজনে পৃথক পৃথক বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে। বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে অন্যূন ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এর বেশি কাজ করাতে চাইলে অধিকাল (ওভার টাইম) ভাতা দিতে হবে। নতুন আইনে একজন গণমাধ্যমকর্মী বছরে ১৫ দিন নৈমিত্তিক ছুটি পাবেন। এছাড়া প্রতি ১১ দিনে এক দিন অর্জিত ছুটি অর্জন করবেন। এই ছুটি ভোগ না করলে তা জমা থাকবে এবং চাকরি শেষে সর্বোচ্চ ১০০ দিন নগদায়নের সুবিধা পাবেন। চিকিৎসকের প্রত্যয়ন সাপেক্ষে একজন গণমাধ্যমকর্মী চাকরির মেয়াদের অন্যুন ১৮ ভাগের এক ভাগ অংশ সময় পূর্ণ বেতনে অসুস্থজনিত ছুটি পাবেন। বিলে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একজন গণমাধ্যমকর্মী পূর্ণ বেতনে এককালীন বা একাধিকবার অনূর্ধ্ব ১০ দিন পর্যন্ত উৎসব ছুটি ভোগ করতে পারবেন। তিন বছর পরপর ১৫ দিনের শ্রান্তি বিনোদন ছুটি পাবেন। প্রতি বছর একজন কর্মী এককালীন বা একাধিকবার অনূর্ধ্ব ১০ দিনের উৎসব ছুটি ভোগ করতে পারবেন। উৎসবের দিনে কাজ করালে প্রতি কার্যদিবসের জন্য দুই দিনের মূল বেতন বা দুই দিনের বিকল্প ছুটি মঞ্জুর করতে হবে। এক বছর চাকরি করার পর ভবিষ্য তহবিলে কর্মী ও মালিকের আট থেকে ১০ শতাংশ চাঁদার কথা বিলে বলা হয়েছে। বিলে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে গণমাধ্যম কর্মী এবং মালিকের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য ‘গণমাধ্যম কর্মী কল্যাণ সমিতি’ গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, দেনাপাওনা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সরকার এক বা একাধিক বিভাগীয় এলাকার জন্য গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করতে পারবে। এই আদালতের একজন চেয়ারম্যান এবং দুই সদস্য থাকবে। কর্মরত জেলা জজদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান হবেন। দুই সদস্যের একজন হবেন গণমাধ্যম মালিক, আরেকজন গণমাধ্যমকর্মী। প্রস্তাবিত আইনে বলা আছে, গণমাধ্যম আদালত ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিতে অনুসরণ করবে। প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা গণমাধ্যম আদালতেরও থাকবে। আপিল আদালতের চেয়ারম্যান হবেন হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক বা অতিরিক্ত বিচারক। চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য সরকার এক বা একাধিক সদষ্য নিয়োগ করতে পারবে। সদস্যরা আসবেন তিন বছর কর্মরত আছেন বা ছিলেন এমন জেলা জজদের মধ্যে থেকে। বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যম আদালতের আদেশ পালন করতে অস্বীকার করলে বা ব্যর্থ হলে তিন মাসের জেল বা অনূর্ধ্ব পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হবে। কোনো গণমাধ্যম মালিক নারী কর্মীকে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা না দিলে সেই মালিককে ২৫ হাজার টাকা দণ্ড দেওয়া যাবে। ন্যূনতম বেতন হারের কম বেতন দিলে এক বছর থেকে পাঁচ বছরের জেলের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো গণমাধ্যমকর্মী আদালতে মিথ্যা বিবৃতি দিলে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের জেল হবে। গণমাধ্যম মালিক মিথ্যা বিবৃতি হলে অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন মাসের কারাদণ্ড হবে। মালিকের পক্ষ থেকে অন্যায় আচরণ হলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের জেল হবে। বিলে বলা হয়েছে, এক বছর চাকরিরত অবস্থায় কোনো গণমাধ্যমকর্মী মারা গেলে মৃতের মনোনীত ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে কর্মীর প্রত্যেক পূর্ণ বছর বা ছয় মাসের অধিক সময় চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ দিনের এবং কর্মরত বা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারণে ৪৫ দিনের বেতন দিতে করতে হবে। কোনো স্থায়ী কর্মী ৩০ দিনের নোটিস এবং অস্থায়ী কর্মী ১৫ দিনের নোটিস দিয়ে চাকরিতে ইস্তফা দিতে পারবে। আর কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত কর্মী ছাঁটাই করতে চাইলে সরকারকে দ্রুত লিখিতভাবে জানাতে হবে। ছাঁটাই করতে হলে কর্মীকে এক মাসের লিখিত নোটিস দিতে হবে অথবা এক মাসের মূল বেতন দিতে হবে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতি বছর চাকরির জন্য ৩০ দিনের মূল বেতন দিতে হবে। সিলেটসানডটকম -এবিসি

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net