যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে অবস্থিত তিনতলা বাড়িটির দাম ২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে) ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের ১২ জুন এস কে সিনহা সম্পূর্ণ ক্যাশ ডেলিভারিতে নিউজার্সির প্যাটারসনের জাপার স্ট্রিটে ১৭৯ হোল্ডিংয়ের বাড়িটি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহাকে ব্যবহার করে এস কে সিনহা বাড়িটি কেনার অর্থ বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় পাচার করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করেছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। কমিশনের অনুমোদন পেলেই মামলাটি দায়ের করা হবে।
জানা গেছে, এস কে সিনহা কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছিলেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান।
পরে বিএফআইইউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পাচার ও বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য তথ্য সংগ্রহ করে দুদকে পাঠায়। তাতে দেখা যায়, এস কে সিনহা বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্ন ভাবে অবৈধ টাকা অর্জন করে পরে তা হুন্ডিসহ বিভিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।
পাচার করা ২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারে ২০১৮ সালের ১২ জুন ১৭৯, জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউ জার্সি ০৭৫২২'তে তিনতলা বাড়িটি ক্রয় করা হয়
। প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ অনুযায়ি ওই বাড়ীটি পরোক্ষভাবে এস কে সিনহারই।বিএফআইইউর মাধ্য প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সাবেক ওই প্রধান বিচারপতি ও ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এ সংক্রান্ত আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকুয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠাবে।
মামলার পর যখন চার্জশিট পেশ করা হবে তখন এমএলএআরের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য চার্জশিটে উল্লেখ করা হবে।দুদক জানায়, অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে অবৈধভাবে অর্থ উর্পাজন করে ওই অপরাধলব্ধ অর্থ নিজেদের ভোগ দখলে রেখে উহার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান গোপন করে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাচার করেছেন।
এই ঘটনায় তিনি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২),(৩) ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য যোগ্য অপরাধ করেছেন।
এস কে সিনহার বিরুদ্ধে বিদেশে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ থেকে তথ্য তথ্য সংগ্রহের জন্য বিএফআইইউতে চিঠি দিয়েছিল দুদক। কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুর থেকেও তথ্য তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
পরে বিএফআইইউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য দুদককে দিয়েছে।দুদক সূত্র জানায়, সাবেক প্রধান বিচারপতির ছোট ভাই যুক্তরাষ্ট্রে একজন ডেন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত।
তিনি আমেরিকার একটি ব্যাংক থেকে ৩০ বছরের জন্য ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ ডলার ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ডলারে একটি বাড়ি ক্রয় করেছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলারে আরেকটি বাড়ি ক্রয় করেন।
অনন্ত কুমার সিনহার ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংক, প্যাটারসন, নিউজার্সির একাউন্ট নম্বরে (৮৫৮০৩৩৭৫) ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে একই বছরের ২০ জুন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়।
অন্যদিকে অনন্ত কুমার সিনহা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯০ ডলারের ক্যাশিয়ার চেক সংগ্রহের জন্য তার বড় ভাই এস কে সিনহাকে নিয়ে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে আসেন এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এস কে সিনহা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি ক্রয়ের জন্য বন্ধুর কাছ থেকে তিনি ফান্ড পেয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে মানি লন্ডারিংয়ে সাত আর অর্থ আত্মসাতের মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর মধ্যে মানি লন্ডারিংয়ে সাত আর অর্থ আত্মসাতের মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) এই ঋণ আত্মসাতের মামলার ১১ আসামির মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া খালাস পেয়েছেন দুজন।
আদালত সূত্র জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তরের অভিযোগে গত বছরের ১০ জুলাই মামলাটি দায়ের করে দুদক।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net