চলতি শীতকালে আমাদের শরীর প্রচলিত সংক্রমণের পাশাপাশি একটি নতুন সংক্রমণের জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রচলিত সংক্রমণ ঠান্ডা-ফ্লুকে আমরা ততটা গুরুত্ব না দিলেও নতুন সংক্রমণ কোভিড-১৯ এড়াতে বেশ সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।
চলতি মহামারি কোভিড-১৯ বিভিন্ন দেশে শীতকালেই বেশি মৃত্যু ঘটাচ্ছে। ঠান্ডার প্রভাবে ও এসময় লাইফস্টাইলের কিছু অসংগতি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে বেশ দুর্বল করে দিতে পারে। হয়তো একারণেই শীতকালে কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যু বেশি হচ্ছে। কেবল কোভিড-১৯ নয়, আপনার অসচেতনতায় প্রচলিত সংক্রমণ ঠান্ডা-ফ্লুও মারাত্মক পরিণতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই ঠান্ডার দিনগুলোতে নিজেকে বিভিন্ন সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে রক্ষার্থে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে এমন খাবারে মনোনিবেশ করা উচিত। ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার মানে হলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। শীতকালে সংক্রমণের জটিলতা থেকে বাঁচাতে পারে এমনকিছু খাবার-
* কমলা: ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। ভিটামিন সি সাদা রক্তকোষের উৎপাদন বাড়াতে অবদান রাখে। সাদা রক্তকোষ সংক্রমণ তাড়াতে কাজ করে। আপনি শরীরে ভিটামিন সি যোগাতে কমলা খেতে পারেন। কেবল কমলা নয়, অন্যান্য সাইট্রাস ফলও খেতে পারেন। নেফ্রোলজি স্পেশালিস্ট তেফিক রিফকি ইভরান কায়া বলেন, ‘প্রায় সকল সাইট্রাস ফলই ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস, যেমন- কমলা, লেবু ও মোসাম্বি। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন সাইট্রাস ফল খাওয়া উচিত, কারণ আমাদের শরীর ভিটামিন সি উৎপাদন ও সঞ্চয় করে না।’
* লাল ক্যাপসিকাম: আমাদের ইমিউন সিস্টেমের জন্য আরেকটি সুপারফুড হলো লাল ক্যাপসিকাম। লাল ক্যাপসিকামে ভিটামিন সি এর পরিমাণ কমলার চেয়েও বেশি। যেখানে ১০০ গ্রাম কমলায় ৫৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাবেন, সেখানে একই পরিমাণ লাল ক্যাপসিকামে ৮২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। লাল ক্যাপসিকামে প্রচুর বিটা ক্যারোটিনও পাওয়া যায়। শরীর বিটা ক্যারোটিনকে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। ভিটামিন এ প্রদাহ কমিয়ে অ্যান্টিবডিকে টক্সিন বা ভাইরাস দমাতে সহায়তা করে।
* ব্রোকলি: ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ফাইবার ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন। ব্রোকলি হলো সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর সবজিগুলোর একটি, যেটাকে নির্দ্বিধায় আপনার ডায়েটে সংযোজন করতে পারেন। এই সবজির পুষ্টিমান ধরে রাখতে এটাকে অতিরিক্ত রান্না না করাই ভালো, তবে একেবারে কাঁচাও খাওয়া ঠিক নয়। আপনি নিয়মিত ব্রোকলি খেয়ে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারবেন। ব্রোকলির মতো দেখতে আরেকটি সবজি হলো ফুলকপি। ব্রোকলি সহজলভ্য না হলে ফুলকপি খেতে পারেন। উভয় সবজির মধ্যে পুষ্টিগুণে একটু তারতম্য থাকলেও ফুলকপিও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি বাড়াতে পারে।
* পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। একারণে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার ডায়েটে পালংশাক স্থান পাওয়ার যোগ্য। পুষ্টিমান বজায় রাখতে ব্রোকলি ও ফুলকপির মতো পালংশাককেও অতিরিক্ত রান্না না করার চেষ্টা করুন।
* দই: দইয়ে ব্যাকটেরিয়াল ও নন-ব্যাকটেরিয়াল এলিমেন্টস রয়েছে। দইয়ের ব্যাকটেরিয়াল এলিমেন্টসকে প্রোবায়োটিক বলতে পারেন। প্রোবায়োটিক হলো অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত প্রোবায়োটিক খেলে ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্রম সহজ হয়। দইয়ে প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ফলিক অ্যাসিড ও ক্যালসিয়ামও পাবেন- এগুলোও ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। ডা. ইভরান কায়া কৃত্রিম ফ্লেভার ও চিনি মেশানো দইয়ের পরিবর্তে সাদামাটা দই খেতে পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। দই ভিটামিন ডি এরও ভালো উৎস- এই পুষ্টিও সংক্রমণকে হঠাতে সাহায্য করে।
* কাঠবাদাম: কাঠবাদামে প্রচুর ভিটামিন ই রয়েছে বলে এটাকে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। আধবাটি কাঠবাদাম খেয়ে এই চাহিদা মেটানো যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ই সংক্রমণকে দুর্বল করেছে, তার মানে হলো ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়েছে। তাই শীতকালে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
সিলেট সান/এসএ
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net