১৯ বছর পর বাচেনার পেট থেকে বের হল কাঁচি
সিলেট সান ডেস্ক:: ||
২০২২-০১-১০ ১৫:২৯:৪২
অপারেশনের পরও সুস্থ হননি বাচেনা খাতুন। কারণ পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করেন চিকিৎসক। এভাবে চলে ১৯ বছর। এরপর আবারও অপারেশন করা হয় তার। সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে তার পেট থেকে কাঁচি অপসারণ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন। তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাচেনা খাতুন। বাচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী।
এর আগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে অসুস্থ বাচেনা খাতুনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকে মেহেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগে হইচই পড়ে যায়। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়।
৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নারী সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন বাচেনা খাতুন। এরপর থেকে পেটের যন্ত্রণা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। ডায়াবেটিস পরীক্ষাসহ খাবার কিনতে কিনতে একেবারে নিঃস্ব তিনি। যে ক্লিনিক থেকে অপারেশন করা হয়েছিল, সেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সব খরচের আশ্বাস দিয়েও তারা পিছু হটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট (সিনিয়র) ডা. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ৪ জানুয়ারি থেকে বাচেনা খাতুনকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসের জন্য অস্ত্রোপচার পিছিয়ে যাচ্ছিল। ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ থাকায় আজ তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে মেহেরপুরের গাংনীতে অবস্থিত রাজা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসেন বাচেনা খাতুন। রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার শরাণাপন্ন হলে তিনি বাচেনা খাতুনকে পিত্তথলির পাথর অপারেশনের পরামর্শ দেন। ওষুধপত্র ও অপারেশন ফি বাবদ ২০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা। স্ত্রীর অপারেশনের জন্য একমাত্র সম্বল ১০ কাঠা জমি বিক্রি করেন আবদুল হামিদ।
২০০২ সালের ২৫ মার্চ বাচেনা খাতুনের অপারেশন করেন সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে ছিলেন রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার। অপারেশনের এক সপ্তাহ পর বাচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
তবে অপারেশনের পর বাচেনা খাতুনের অসুস্থতা দিন দিন বাড়তেই থাকে। পুনরায় ডা. রাজার শরণাপন্ন হলে তিনি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা বলে ফেরত পাঠান। কিন্তু তীব্র যন্ত্রণা থেকে কোনভাবেই মুক্তি পাচ্ছিলেন না ওই ভুক্তভোগী। সমর্থ অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাও নেন তিনি। সবশেষ চিকিৎসার শেষ সম্বল দুটি গরুও বিক্রি করে দেন বাচেনার স্বামী।
সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যান বাচেনা খাতুন। সেখানে এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়- তার পেটের মধ্যে ৪-৫ ইঞ্চির একটি কাঁচি রয়েছে। এমন খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ওই নারী। এরপর ঘটনাটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সিলেট সান/এফবি
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net