সাহিত্যাঙ্গনে কিংবদন্তি এক নাম হুমায়ূন আহমেদ। আজ ১৩ নভেম্বর এই কিংবদন্তির জন্মদিন। জন্মেছিলেন ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে। তার বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। হুমায়ূন আহমেদ তার কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যর বেশিরভাগ শাখাতেই। আজ তার ৭৪তম জন্মদিন।
ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র সব শাখাতেই অসম্ভব সফল এই নন্দিত লেখক। বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের জানান দেন। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। আগুনের পরশমনি ছবির দৃশ্যে আসাদুজ্জামান নূর ও শীলা টেলিভিশন নাটকেও চমক দেখিয়েছেন তিনি। বদলে দেন নির্মাণের বাঁক।
১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।
১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমাটি। এটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এ ছাড়াও এটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এরপর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন।
২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। নিজের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
তবে হুমায়ূন আহমেদ সর্বজন প্রিয় হয়ে আছেন হিমু ও মিসির আলী চরিত্রের স্রষ্টা হিসেবে। এছাড়াও তাকে বলা হয় তারকা গড়ার কারিগর। তার হাত ধরে অনেক অভিনয় ও সঙ্গীতশিল্পীরা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও দোসরদের হাতে শহীদ হন। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তার দুই ভাই মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। প্রত্যেককেই লেখালেখিতে পাওয়া গেছে।
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন অভিনয়, নৃত্যের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও প্রশংসিত। তার বড় পুত্র নুহাশ হুমায়ূনও সাম্প্রতি নাটক নির্মাণে নাম লিখিয়েছেন।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদ আমাদের ছেড়ে চলে যান। মরণব্যাধি ক্যানসারের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাবার পর সেখানেই তিনি মারা যান। মাত্র ৬৪ বছর বয়সেই তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। সেখান থেকে মরদেহ ঢাকায় আনার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে লাখো মানুষের অশ্রু পুষ্পতে সিক্ত হন তিনি।
ওই বছরের ২৪ জুলাই নুহাশপল্লীর লিচুতলায় চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। সেদিন গভীর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল তার লাখো ভক্ত অনুরাগী। হুমায়ূন আহমেদ আজো বেঁচে আছেন লাখো পাঠকের হৃদয়ে।
সিলেট সান/এসএ
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net