যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের অর্ধ শতকের বন্ধুত্ব আরও সম্প্রসারণ এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে সনাতন দৃষ্টিভঙ্গিতে আমরা আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে দেখি, তাতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এখন আমাদের অংশীদারিত্ব হওয়া দরকার সত্যিকার অর্থেই কৌশলগত।
আর সেজন্য এখন শান্তিরক্ষা, সন্ত্রাস দমন, মেরিটাইম এবং এভিয়েশন সিকিউরিটির মত ক্ষেত্রেও দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরও সম্প্রসারিত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার লন্ডনে ব্রিটিশ ফরেইন, কমনওলেথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের লকার্নো রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় বাংলাদেশ সরকার প্রধান বলেন, দুই দেশের এই অংশীদারিত্বের কেন্দ্রে রয়েছে প্রাণবন্ত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আমরা গর্বিত। ওয়েস্টমিনস্টারে তাদের প্রতিনিধিত্ব ক্রমশ বাড়ছে, তাতে আমি খুবই আনন্দিত। এখন যে পাঁচজন (বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি) আছেন, তাদের সবাই নারী।
শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে এ কমিউনিটির আরও অনেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জায়গা করে নেবে, এ বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে সত্যিকার অর্থেই বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়ানোর যে আগ্রহ যুক্তরাজ্য দেখিয়েছে, তাকে তিনি স্বাগত জানান।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান খুঁজে বের করতে যুক্তরাজ্যের যে ভূমিকা, সে কথা বক্তৃতায় স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের আইনশঙ্খলা রক্ষা করা যে দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রি বলেন, মিয়ানমারের নাগরিক এই রোহিঙ্গরা যাতে দ্রুত নিরাপদে এবং আত্মমর্যাদার সাথে তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব। আর এটাই এ সঙ্কট সমাধনের একমাত্র পথ।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে সড়ক, রেল, সমুদ্রপথ, জ্বালানি এবং ডিজিটাল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে, বিশেষ করে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে আমাদের যারা অংশীদার আছেন, এই বিনিয়োগ থেকে তারাও লাভবান হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আরও বেশি অংশগ্রহণ আমরা দেখতে চাই। বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার এটাই সময়।
ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবন ও সুন্দর সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত একটি ‘ব্লুপ্রিন্ট’ তৈরি করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি জানি, আমি এতদিন বাঁচব না। তবে আমি পরিকল্পনা এবং ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে রেখেছি।”
১৯৭৫ সালে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে পরিবারের সবাইকে হারানোর কথা স্মরন করে বক্তৃতার এক পর্যায়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং দরিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
গ্লাসগোতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর বুধবার দুপুরেই লন্ডনে পৌঁছান শেখ হাসিনা।
সন্ধ্যায় ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর আরেক মেয়ে শেখ রেহনাও ছিলেন তার সঙ্গে। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইসিটি জুনাইদ আহমেদ প্রতিমন্ত্রী পলক এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট সান/এসএ
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net