২০২১-০৪-০৩ ০২:৩৫:০৭ / Print
কয়েকদিন ধরেই লন্ডনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ছবি দেখতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে অনেকের। ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে লন্ডনের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ক্যানোরি ওয়ার্ফের ছবির মিল না পেয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীর্যক মন্তব্যও করছেন। বিশেষ করে গুরুত্বর্পূণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা ছবি টুইট করায় এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হচ্ছে।
লন্ডনের কয়েকজন সাংবাদিক জানান, গত ২৬ মার্চ ছিল স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে লডনের আইকনিক স্থাপনা লন্ডন আই সাজানো হয় লাল সবুজের সমারোহ দিয়ে।
ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপরিশেন’ (বিবিপিআই) ও ‘লাস্টমিনিট ডটকম লন্ডন আই’ -এর যৌথ উদ্যোগে টেমস নদীর তীরে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম চাকা স্থাপনাটি সাজানো হয়।
এক টুইট বার্তায় সেটির ছবি প্রকাশ করেন লন্ডন সিটি হলের ট্রান্সর্পোট কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও লিবারেল ডেমোক্র্যাট বিধান সভার সদস্য ক্যারোলিন পজিন।
ছবির ক্যাপশনে লিখেন, লন্ডনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে স্থানীয়দের শক্তিশালী সর্ম্পক রয়েছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক নাগরিক রাজধানীতে বসবাস করে।
বিবিপিআিই ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি কাউন্সিলার আব্দাল উল্লাহর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এটি করা হয়। এক বার্তায় তিনি বলেন, “লন্ডন আই-এর উপরে উঠলে ৪০ কিলোমিটার দূর র্পযন্ত নগরীর দৃশ্য দেখা যায়। এটি লন্ডনের পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থাপনা।
এটি সাজানোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের জন্য বড় বড় শহরগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও দর্শনীয় স্থানে আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়। অ্যাডনবিরার চেম্বার অব কমার্স বিল্ডিং ও সিটি এয়ারপোর্ট, ম্যানচেস্টার সেন্ট্রাল লাইব্রেরি বার্মিংহ্যাম সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, নর্থাম্পটন ইউনিভার্সিটি বিল্ডিং কার্ডিফ ক্যাসল ও বর্ণিল সাজে সাজানো হয়।
২৯ মার্চ লন্ডনের আরেকটি বাণিজ্যিক ভবন ক্যানারি হোর্য়াফও লাল সবুজে সাজানো হয়। কিন্তু যেভাবে সেটি সাজানো হয়েছে সেভাবে উপস্থাপন না করে ফটোশপে করা একটি ছবি আপলোড করা হয়।
টাওয়ার হেমলেট স্পিকার আহবাব হোসেন স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্যানোরি ওয়ার্ফের ছবি পোস্ট করেন। তিনি ৭ জনকে ট্যাগও করেন।
তিনি পোস্ট করার পর পরই ছবিটি ভাইরাল হয়।
লন্ডন হাইকমিশনও ছবিটি তাদের পেইজে আপলোড করে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ছবি পোস্ট করায় দ্রুত ছবিটি ভাইরাল হয়। এরপরই অনেকে দেখার জন্য ক্যানোরি ওয়ার্ফে ছুটে যান। বাস্তবতার সঙ্গে ছবির মিল না পেয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া মন্তব্য করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া সমালোচনা শুরু হলে স্পিকার আহবাব হোসেন ও হাই কমিশন পোস্টটি মুছে ফেলে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা এখনো অব্যাহত আছে।
আব্দুল হান্নান নামে একজন সাংবাদিক তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন, 'ভালই বোকা বানাইছে, দায়ি কে?
আরেকজন লিখেছেন, ‘ছি ছি ছি বাটপারি ছবিটা কে পোস্ট করেছে?’
ম্যাক্স মিডিয়ার সংবাদ পাঠিকা রুপি আমিন লিখেন, ফেইক প্রচারনা করছে।
আ.স.ম মাসুম দুটো ছবি পাশাপাশি পোস্ট করে কোনটা আসল আর কোনটা নকল বলে মন্তব্য করেন।
লন্ডন থেকে এক সাংবাদিক জানান, ফটোশপে করা ছবিটি দেখতে খুব সুন্দর হওয়ার সেটি দেখার জন্য সেখানে ছুটে যান লোকজন। কিন্তু আপলোড হওয়া ছবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রের মিল না পাওয়ায় অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ফটো সাংবাদিক জিআর সোহেল সিলেটসানকে বলেন, আমি লন্ডন আইয়ের ছবি তুলেছি। সেটি আমার পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। কিন্ত ক্যানারি ওয়ার্ফের যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সেটি দেখে নিজে সেটির ছবি তুলতে যাই। কিন্ত বাস্তবতার সঙ্গে ছবির কোন মিল খোঁজে পাইনি। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে একটি জঘন্য মিথ্যাচার।।
সিলেট সান/এসএ