শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইংরেজী, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

সুনামগঞ্জে পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ সূর্যমুখী বাগান

স্টাফ রিপোর্টার, সুনামগঞ্জ::

২০২১-০২-২৫ ০৪:২৫:২০ /

মানুষ সুন্দরের পূজারী,যেকোনো সুন্দর জিনিস পেতে মানুষের মন ব্যাকুল হয়। ফুল হচ্ছে মানুষের কাছে তেমনি ভালোবাসা ও আকাংক্ষার বস্তু। মন ভালো করার জন্য ফুলের বাগানে ভ্রমণ অত্যন্ত সুখকর একটি বিষয়। ফুল এমন একটি বস্তু ‘যা চোখের পলকেই বিষণ্ন মনকে প্রফুল্ল করে দিতে পারে। সত্যি কথা বলতে একটি মানুষ মনের দিক দিয়ে যতই কঠোর হোক না কেন, ফুল তার ভালো লাগবেই। কেননা ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া কঠিন।

পর্যটনসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জ জেলায় শিমুল বাগান, বারেকটিলা, শহীদ সিরাজ লেক, যাদুকাটা নদী, টাংগুয়ার হাওরের পর এবার পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী বাগান। বাগানে এসে অনেকেই নিজে, বন্ধু-বান্ধবসহ ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। এ বাগানের ছবি এখন ফেসবুকে ভাইরাল। এসব পোস্ট দেখে সৌন্দর্যপ্রেমী ও পর্যটকদের মাঝে বাগানটি দেখতে আগ্রহীদের সংখ্যা বাড়ছে। একজন অন্যজনের কাছ থেকে খবর নিয়ে অনেকেই আসছে সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে যেতে হবে সুনামগঞ্জে জেলার সদর উপজেলার আব্দুর জহুর সেতু পাড় হয়ে
সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়ক সংলগ্ন স্বাধীন বাজার,লালপুর গ্রামে স্বপ্ন ছোঁয়া সানফ্লাওয়ার গার্ডেনে। আর এই বাগানের এই দৃশ্য থাকবে আগামী কয়েক মাস।

জানা যায়,জেলা কৃষি বিভাগের প্রণোদনা ছাড়া নিজস্ব উদ্যোগে বাণিজ্যিক ও পর্যটকদের আনন্দ দেয়ার উদ্দেশ্যেই ২বিগা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছে লালপুর গ্রামের স্থানীয় যুবক নজরুল ইসলামসহ তার তিন বন্ধু মিলে। তারা চারজন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় এক হাজারের অধিক গাছের প্রতিটিতে ফুল ফুটেতে শুরু করেছে। সকালে সূর্যের দিকে মুখ করে ফুটে থাকা এসব ফুলের সমারোহ বিকালে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সৌন্দর্যপ্রেমীদের কাছে টানছে। এসে এখানে কেউ ছবি তুলছেন,কেউ সেলফি তুলছেন, আবার অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সারা দিনই নারী-পুরুষ ও তরুণ-তরুণীদের ভিড় থাকে।

নজরুল ইসলাম জানান,সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবসে অনেকে দর্শনার্থী সমাগম ঘটেছিল বাগানে। এই মৌসুমী পর্যটন এলাকাটিকে ঘিরে জমে উঠেছে ছোটখাট কিছু দোকানপাটও। শুকনা খাবার, তরমুজ ও চা নিয়ে বসে গেছেন কয়েকজন স্থানীয় মানুষ। অনেক বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, মোটর সাইকেলের চালকরা পযর্টকদের আনা-নেয়ায় বেশ ভালো আয় করেছে। বাড়তি রোজগারের উপায় পেয়ে ব্যবসা করতে পেরে খুশি অনেকেই।

জেলা শহরের বাসিন্দা বাবুল মিয়া,আশরাফুল ইসলাম সুমন জানান, হাজারো ফুলের সমারোহে মুগ্ধ আমরা। ফুলের সৌন্দর্যে কিছু সময় আনন্দে থাকা যায়। সূর্যমুখী বাগান আসলে অন্য রকম, যা কোথাও আমি পাইনি।জীবনের একঘেয়েমি কাজের মাঝে যখন বিরক্ত তখন নিজেকে সতেজ করতে ঘুরে আসতে পারেন এই সূর্যমুখীর বাগানে। একটু চাইলেই সেখানে ভালো সময় কাটাতে পারেন পরিবার-পরিজন অথবা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে। আর উপভোগ করতে পারেন নিজের সর্বোত্তম সময়টুকু।

বাগানে বেড়াতে আসা তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ,লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন,শহরের অদূরে সূর্যমুখী বাগানটি খুবই সুন্দর। যাত্রাপথে এ ফুলের সৌন্দর্য আমাদের কাছে টেনে নিয়েছে। স্মৃতি ধরে রাখতে সূর্যমুখীর কাছে গিয়ে কিছু ছবি তুলেছি। ভাল লেগেছে।

বাগানের মালিক নজরুল ইসলাম জানান,১৫ মার্চের মধ্যে ফুলগুলো বীজ সংগ্রহের উপযোগী হয়ে উঠবে। তখন সূর্যমুখী গাছ কেটে বীজ সংগ্রহ করা হবে। হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা এই সোনালির শোভা ১৫মার্চের পর আর থাকবে না। আগের মতোই সাদামাটা একখণ্ড জমিতে পরিণত হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান,আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছ থেকে জন প্রতি ১০টাকা নিচ্ছি। বেড়াতে আসা লোকজন বাগানের ভেতরে বাগানে প্রবেশের জন্য একটি ছোট সেতু,একটি বসার ঘর ও শিশুদের জন্য দোলনা তৈরি করে দিয়েছি।  আশা করি আমাদের দেখে স্থানীয় কৃষক ও বেকার যুবকরা এই সূূর্য মুখী চাষে আগ্রহী হবে।

 

সিলেট সান/এসএ

এ জাতীয় আরো খবর

দিরাইয়ে শালিস না মেনে যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

দিরাইয়ে শালিস না মেনে যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

দিরাইয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল দুই কৃষকের

দিরাইয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল দুই কৃষকের

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে শান্তিগঞ্জে সব ওলটপালট

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে শান্তিগঞ্জে সব ওলটপালট

জগন্নাথপুরে কবরস্থান দখলের চেষ্টা: ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

জগন্নাথপুরে কবরস্থান দখলের চেষ্টা: ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

 সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনে বিজয়ী যারা

সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনে বিজয়ী যারা

প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারে কাছেও শাহীনুর পাশা, বিজয়ী মন্ত্রী মান্নান

প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারে কাছেও শাহীনুর পাশা, বিজয়ী মন্ত্রী মান্নান