শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইংরেজী, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা ENG

আইমএফ-এর আয়নায় বাংলাদেশ ও ভারত

অজয় দাশগুপ্ত

২০২০-১০-২১ ০৪:৩১:৩৯ /

‘ভারত, পূর্ব দিকে তাকাও : বাংলাদেশ ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। আমাদের (ভারতের) জন্যও শিক্ষণীয়’- ১৫ অক্টোবর এটা ছিল ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয় নিবন্ধের শিরোনাম। আগের দিন (১৪ অক্টোবর) আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম ছিল- পড়ছে ভারত! মাথাপিছু উৎপাদনে ‘অচ্ছে দিন’ যাচ্ছে বাংলাদেশে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছেন- ‘এমার্জিং ইকোনমির যে কোনো দেশের এগিয়ে যাওয়া ভাল সংবাদ। বাংলাদেশ ২০২১ সালে মাথা পিছু জিডিপিতে এগিয়ে যাবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ৫ বছর আগে জিডিপিতে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে ২৫ শতাংশ এগিয়ে ছিল।”

দি প্রিন্ট-এর প্রধান সম্পাদক খ্যাতিমান সাংবাদিক শেখর গুপ্ত ১৫ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে বলেছেন- “আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’-এর চলতি অর্থ বছরের প্রতিবেদন ভারতের অর্থনীতির অ্যাকিলিস হিল বা সবচেয়ে দুর্বল স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে। এ সংস্থার আয়না ভারতের জন্য বড়ই নিষ্ঠুর!”

ভারতের জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইট বার্তায় বলেছেন- “গত ৬ বছরে বিজেপির বিদ্বেষমূলক জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতির দুর্দান্ত সাফল্য হলো- বাংলাদেশ ভারতকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে।”

আইএমএফ বলেছে, ভারতের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপি দাঁড়াবে ১ হাজার ৮৭৭ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকার কিছু বেশি)। অন্যদিকে, বাংলাদেশের মাথা পিছু উৎপাদন হবে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা)।

বাংলাদেশের কাছে এমন হার ভারতের ক্ষমতাসীনদের জন্য দুঃস্বপ্ন বৈকি। এটাও লক্ষণীয় যে ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জনকে ইতিবাচক মূল্যায়ন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারকে দেওয়া হয়েছে সাধুবাদ। একইসঙ্গে বাংলাদেশের প্রদর্শিত পথ থেকে শিক্ষা গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কি তেমন আলোচনা আমরা দেখি?

করোনাভাইরাস হানা দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত সংস্থা ও ব্যক্তি নেতিবাচক দিকগুলোকেই বেশি বেশি সামনে এনেছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বিবিসির এক প্রতিবেদনের কথা। প্রতিবেদক প্রশ্ন তোলেন- ‘বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প টিকে থাকতে পারবে?’ রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। বছরে রপ্তানির পরিমাণ ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি। কিন্তু সামনে কেবলই দুঃসময়।

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক ওই সময়েই বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেছেন, “কোনো ক্রেতাই এখন প্যান্ট-শার্ট কিনবে না, কিনবে খাবার ও ওষুধ।” প্রতিদিন টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে খবর থাকত- শত শত কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে গেছে। আরও বাতিল হচ্ছে।

১ এপ্রিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম খবর প্রকাশ করে, “পোল্ট্রি শিল্পের ক্ষতি ১৬০০ কোটি টাকা।” ৫ এপ্রিল ইত্তেফাকের একটি খবরের শিরোনাম ‘জাহাজ নির্মাণ শিল্প ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির মুখে।’ আরেকটি দৈনিকে খবর প্রকাশ হয়- পরিবহন খাতের ৮০ লাখ শ্রমিকের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসে নাই।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ বা সিপিডি বলেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে যাবে, যা ৩০ বছরে সবচেয়ে কম।

বেকারের সারিতে নতুন কত কোটি নারী-পুরুষ নাম লেখাবে- এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে নিয়মিত। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির চাকা সচল করার জন্য এক লাখ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। ত্রাণ তৎপরতা চলতে থাকে সমানে। ৫০ লাখ অতিদরিদ্র পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে মোবাইল ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদানের ঘোষণা দেন। ‘রিলিফ চোররা’ এ থেকে ফায়দা লোটার জন্য তৎপর হয়। অনিয়ম-দুর্নীতি জানার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে অর্থনীতির চাকা যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে সে বিষয়টি অনেকটা আড়ালেই থেকে যায়।

আইএমএফ-এর প্রতিবেদন ভারতকে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়েছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যে ঝঞ্ঝা-ঝড়-দুর্বিপাকেও মাথা নোয়াবার নয়- সেটা কি সকলে উপলব্ধি করে?

শেখর গুপ্ত আইএমএফ-এর ঝাঁকুনি দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার সময় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (২০২০) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত স্বাতী নারায়নের এক প্রতিবেদনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ওই সময়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক মন্ত্রী বিদ্বেষপ্রসূতভাবে বলেছিলেন, ‘নাগরিকত্ব প্রদান করা হলে বাংলাদেশের অর্ধেক লোক ভারতে চলে আসবে।’ স্বাতী নারায়ন প্রশ্ন তুলেছিলেন- কেন আসবে? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাড়িতে টয়লেট, মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, স্কুল-কলেজে ছাত্রী ভর্তি, নারী কর্মী, সাক্ষরতার হার- এ সব অনেক সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে। তারা বিনামূল্যে প্রতি বছর চার কোটির বেশি ছাত্রছাত্রীকে পাঠ্যবই দিচ্ছে। বাংলাদেশ কেবল মাথা জিডিপিতেই ভারতের থেকে সামান্য পিছিয়ে। শেখর গুপ্ত বলেছেন, এখন জিডিপিতেও ভারতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। শুধু এ বছর নয়, সামনের জন্য যে ভবিষ্যদ্বাণী আইএমএফ-এর সেটাও নরেন্দ্র মোদী সরকারের জন্য সুখকর কিছু নয়। এ সংস্থা বলছে, আগামী বছর ভারতের জিডিপি মাথা পিছু হবে ২০৩০ ডলার, বাংলাদেশের ১৯৮৯ ডলার। বাংলাদেশকে পেছনে ফেলার আনন্দ স্থায়ী হবে না। কারণ ২০২৪ সালে দুই দেশের জিডিপি সমান হয়ে যাবে, বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে পয়েন্টের ব্যবধানে। আর পরের বছর, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ২৭৫৬ ডলার, ভারতের ২৭২৯ ডলার।

এটা পূর্বাভাস, ঠিকঠাক হবেই- এমন কথা নেই। গড় জিডিপিতে ১০-১৫ হাজার কোটি টাকার মালিক আর হতদরিদ্রকে সমান করে দেখানো হয়, এটাও ভুললে চলবে না। শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু জিডিপি ২০২০ সালেই ৩৭০০ ডলার, চীনের প্রায় ১১ হাজার ডলার- এ তথ্যও আমাদের মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানা সমস্যা আছে। দুর্নীতি-অনিয়ম বিস্তর। ধর্মান্ধ অপশক্তি বার বার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এইচ এ এরশাদ স্বীকার করেছিলেন- সৌদি আরব বিপুল অর্থ সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ চালু করায় বাধ্য করেছে। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। সাহায্য আসেনি। শেখ হাসিনা সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনর্বহাল করেছেন। ভারত ও চীন, উভয় দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ সুসম্পর্ক রেখে চলেছে। কিন্তু দেশের ভেতরেই এমন অনেক লোক রয়েছে যারা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক পছন্দ করে না।

শেখর গুপ্ত বলেছেন, ভারত বিরোধী মনোভাবের পেছনে দিল্লীর দায় আছে। ভারতের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ অনেক কিছু করেছে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকার সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ভারতের চরমপন্থি একাধিক গোষ্ঠীর জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ ছিল। এখন তার অবসান ঘটেছে। এর ফলে পূর্ব দিকের বড় সীমান্ত নিয়ে দুর্ভাবনা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের বড় সমস্যা তিস্তার পানি বণ্টন বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর সরকার এ জন্য পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জিকে দায়ী করছে। তবে অনেক পর্যবেক্ষকের ধারণা, বিজেপিও এ রাজ্যে আগামী বছর নির্বাচন থাকায় সমস্যাটির সমাধান চাইছে না। তবে নরেন্দ্র মোদীর বড় কৃতিত্ব সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন। সমুদ্র সীমানার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বাংলাদেশের অনুকূলে রায়কেও তারা মেনে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা উভয় দেশের জন্য লাভজনক। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিরোধের ইস্যু থাকা স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক বিভাজনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের অভ্যুদয় ঘটেছিল। এখনও তার জের চলছে। বাংলাদেশ ভারত থেকে বছরে ৬০-৭০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করে। চীন থেকে আমদানি প্রায় এক লাখ কোটি টাকার পণ্য। দুটি দেশই বাংলাদেশ থেকে সামান্য পরিমাণ পণ্য নেয়- চীন প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং ভারত প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ভারতের যতটা সমালোচনা হয়, চীনের ততটা হয় না। রোহিঙ্গা ইস্যু সৃষ্টির পেছনে চীনের বিপুল দায়- তারা জাতিসংঘে বার বার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের অনেকেরই অভিমত- ভারত মিয়ানমারকে বাধ্য করছে না রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে। চীনের সমালোচনা সে তুলনায় কম।

রাজনীতি ও কূটনীতি নিয়ে যাদের কারবার, তাদের এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে চলতে হয়।

আইএমএফ-এর পূর্বভাস প্রকাশের পর ভারতের অনেকেই নতুন প্রেক্ষাপটে ‘বাংলাদেশ পলিসি’ নির্ধারণের অনুরোধ করেছেন। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হেয় করার অবস্থান থেকে সরতে বলেছেন। ম্যালাইন কোনোভাবেই নয়- বিশেষভাবে এটা তারা বলেছেন। শেখর গুপ্ত আরও বলেছেন- পাকিস্তানকে ঘিরেই যে এ অঞ্চলের বিদেশ নীতি নয়াদিল্লীর, তার পরিবর্তন জরুরি। বাংলাদেশকে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, ভারত ততটা দিচ্ছে না- এটাও কিন্তু অভিযোগ এবং তা অমূলক বলা যাবে না।

আইএমএফ-এর ঝাঁকুনির পর ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চের ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক-২০২০’ প্রতিবেদনও ভারতের ক্ষমতাসীনদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। তারা বলেছে, গত বছর ১০৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮, এবারে ৭৫-এ উঠে এসেছে। আগের তিন বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৮৬, ৮৮ ও ৯০। অপুষ্টির হারসহ চারটি মানদণ্ড তারা বিবেচনায় নেয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতের অবস্থান ৯৪ তম, পাকিস্তানের ৮৮ ও আফগানিস্তানের ৯৯। ভারত কেবল এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারে- পাকিস্তান তো হারাতে পারেনি!

 

লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু গঠিত জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ও সাংবাদিক।

 

এ জাতীয় আরো খবর

একজন সেলিম আহমেদ ও তার মানবতা

একজন সেলিম আহমেদ ও তার মানবতা

এসএস‌সি '৯৪ ব্যাচের সহপাঠীরা সি‌লে‌টে এক‌ত্রিত হবে ২৪ ডিসেম্বর

এসএস‌সি '৯৪ ব্যাচের সহপাঠীরা সি‌লে‌টে এক‌ত্রিত হবে ২৪ ডিসেম্বর

টেক জায়ান্ট ইনফোসিসে ইয়ুথ ডেলিগেশনের মুগ্ধতা

টেক জায়ান্ট ইনফোসিসে ইয়ুথ ডেলিগেশনের মুগ্ধতা

পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

স্মরণ : বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অভাব 'অনুভব' করেন নগরবাসী

স্মরণ : বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অভাব 'অনুভব' করেন নগরবাসী

বীরের সঙ্গে, বীরবন্ধুর দেশ ভারতের মেঘালয়ে

বীরের সঙ্গে, বীরবন্ধুর দেশ ভারতের মেঘালয়ে