২০২৩-০৫-২৫ ০৬:০৯:৫৫ / Print
বল বীর-
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব এ কবি সারা বিশ্বে সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী মনোভাবের কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি বলে আখ্যায়িত করা হয়। আজ ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) তার ১২৪তম জন্মবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়।
এ বছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ: বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ।’ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মো. রোকনুজ্জমান খাঁন, পিএইচডি; উপাধ্যক্ষ, শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সাম্য ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাংলা কবিতার বিদ্রোহী ও গানের বুলবুল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী এবং বাংলা সাহিত্য তথা জাতীয় জীবনে তার অবদানের উপর প্রাণবন্ত আলোচনা করে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা।
এরপর উপস্থিত সবাই শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ও অংশগ্রহনে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। নজরুল এর জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
প্রধান অতিথির ভাষণে অধ্যক্ষ শুরুতেই বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর আত্মার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও শান্তি কামনা করেন।
তিনি বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন নিপীড়িত মানবতার কবি এবং অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার লেখনী ধূমকেতুর মতো আঘাত হেনে ভারতবাসীকে জাগিয়ে দিয়েছিল। তিনি পরিণত হন বিদ্রোহী কবিতে। সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে অগ্নিকণ্ঠে সোচ্চার হয়ে কবি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গান।
সারা জীবন তিনি সমাজের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে কলম ধরেছেন। তিনি নির্ভীক চিত্তে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষুরধার রচনা অব্যাহত রেখেছেন। থেকেছেন আপসহীন। লোভ–খ্যাতির মোহের কাছে মাথা নত করেননি।
কারা নির্যাতনেও বিচ্যুত হননি লালিত আদর্শ থেকে। অন্যদিকে তিনি মানুষের হৃদয়ের কোমল অনুভূতির প্রতিও সমান আবেগে সাড়া দিয়েছেন। অজস্র গানে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলার সংগীত ভুবন। তিনি শিক্ষার্থীদের কাজী নজরুল ইসলামের জীবনাদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে লালন করে এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে নৈতিকতা সম্পন্ন, মানবিকগুণে সৃষ্টিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সুনাগরিক হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আহবান জানান। পরিশেষে, তিনি অনুষ্ঠান আয়োজনে নিয়োজিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।