শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইংরেজী, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা ENG

ইসলামে ভূমিকম্পের কারণ ও করণীয়

মাওলানা এস এম আনওয়ারুল করীম

২০২৩-০২-১৭ ২২:০৫:০১ /

ভূমিকম্প বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ‘যিলযাল’ নামে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাজিল করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে; কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে,

কিন্তু তা আত্মসাৎ করা হবে (অর্থাৎ যার সম্পদ সে আর ফেরত পাবে না); জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে; ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে;

একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে; বন্ধুকে কাছে টেনে নেবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে; মসজিদে উচ্চ স্বরে শোরগোল (কথাবার্তা) হবে;

যখন সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসকরূপে আবির্ভূত হবে—সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের,

রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথরবৃষ্টির। তখন সুতা ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনের জন্য অপেক্ষা করো।’ (তিরমিজি,

হাদিস নং-১৪৪৭) মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল, ৫৯) তিনি আরো বলেন,

‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম, ৬৫) সহিহ বুখারির বর্ণনায় বিখ্যাত সাহাবি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, ‘যখন তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন রসুল (স.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’

রসুল (স.) বলেছেন, তখন পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে,

অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফেতনা প্রকাশ পাবে এবং খুনখারাবি বাড়বে, তোমাদের সম্পদ এত বাড়বে যে, উপচে পড়বে। (বুখারি,

হাদিস নং-৯৭৯) বর্তমানে যেসব ভূমিকম্প ঘটছে, তা মহান আল্লাহর পাঠানো সতর্ককারী নিদর্শনগুলোর একটি। এগুলো দিয়ে তিনি তার বান্দাদের সাবধান করে থাকেন।

কার্যত এগুলো মানুষের পাপ ও অপরাধের ফল। আল্লাহ বলেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই।

আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা, ৩০) আপদ-বিপদ, সুখ-শান্তি সর্বাবস্থায়ই প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহর ওপর ভরসা করা উচিত।

বিশেষত দুর্যোগ, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প প্রভৃতি মুসিবতের সময় খুবই আন্তরিকভাবে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি জনপদের মানুষগুলো ইমান আনত এবং (আল্লাহকে) ভয় করত, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম।

কিন্তু তারা (আমার নবিকেই) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং তাদের কৃতকর্মের জন্য আমি তাদের পাকড়াও করলাম।’ (সুরা আরাফ, ৯৬) ইতিহাসে আছে, ভূমিকম্প হলে ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) তার গভর্নরদের দান-সদকা করার প্রতি জোর দিয়ে চিঠি লিখতেন।

এছাড়া হাদিস শরিফে এসেছে, সমাজে ব্যভিচার বেড়ে গেলে ভূমিকম্প হয়।

তাই কালক্ষেপণ না করে নিজেদের শুধরে নেওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের রক্ষা করুন এবং নিরাপদ রাখুন।

 

লেখক : আলোচক, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন; বিভাগীয় প্রধান (হাদিস), আল ফাতাহ পাবলিকেশন্স

এ জাতীয় আরো খবর

এ বছর ফিতরা সর্বোচ্চ ২৯৮০ সর্বনিম্ন ১১৫

এ বছর ফিতরা সর্বোচ্চ ২৯৮০ সর্বনিম্ন ১১৫

রোজায় যা করতে পারবেন, যা পারবেন না

রোজায় যা করতে পারবেন, যা পারবেন না

 দেখা গেছে চাঁদ,   মঙ্গলবার রোজা

দেখা গেছে চাঁদ, মঙ্গলবার রোজা

 চাঁদ দেখা গেছে সৌদিতে, সোমবার রোজা শুরু

চাঁদ দেখা গেছে সৌদিতে, সোমবার রোজা শুরু

আজ পবিত্র শবে বরাত

আজ পবিত্র শবে বরাত

চাঁদ দেখা গেছে, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে বরাত

চাঁদ দেখা গেছে, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে বরাত