ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবমাননার দায়ে জাতীয় হিন্দু মহাজোট সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাকেশ রায়কে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড
ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার এ রায় দেন সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক
(জেলা ও দায়রা জজ) মো. আবুল কাশেম। রায় প্রদানকালে আসামি রাকেশ রায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি মোস্তফা দিলওয়ার আল আজহার। তিনি জানান, মামলাটি প্রথমে আইসিটি আইনে দায়ের করা হয়।
পরবর্তীতে ডিজিটাল আইনে রুপান্তরিত করা হয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই রায় দেন আদালত।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কেরাইয়া গ্রামের মৃত সুরেশ রায়ের ছেলে ও হিন্দু মহাজোট নেতা রাকেশ রায় তার ফেসবুক আইডিতে ২০১৭ সালের জুনের শুরুতে একটি পোস্ট করেন।
সেই পোস্টটি ভাইরাল হলে সিলেটে তোলপাড় শুরু হয়। পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) নিয়ে কটূক্তিমূলক ওই পোস্টের পর ৫ জুন জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেন একই উপজেলার বাসিন্দা মাওলানা ফুজায়েল আহমদ।
ওই বছরের ৭ জুন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘদিন জেল খেটে তিনি গত বছর জামিনে বের হন। মঙ্গলবার রায় ঘোষনার পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তফা দিলওয়ার আল আজহার জানান, রাকেশের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ এর ২ ধারায় মামলা
করা হয়েছিলো। যা এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুপান্তরিত হয়েছে।
মামলার শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত রাকেশ রায়কে ওই দন্ড দেন
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননানার অভিযোগে রাকেশ রায়কে ২০১৭ সালের ৭ জুন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরআগে ওই বছরের জুন মাসে রাকেশের বিরুদ্ধে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেন ফুযায়েল আহমদ নামের এক ব্যক্তি। বাদি ও বিবাদি দুজনের বাড়িই জকিগঞ্জ উপজেলায়।
মামলার এজাহারে রাকেশের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নিজের একাউন্ট থেকে ইসলাম ধর্ম, মহানবী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তির অভািযোগ আনা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন জানিয়ে রাকেশের আইনজীবী ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী বলেন, আইনজীবী হিসেবে আমি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বলতে পারি না। তবে ন্যায় বিচারের আশায় আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
এই মামলার ব্যাপারে জামিনে থাকাকালীন সময়ে রাকেশ রায় বলেছিলেন, তার নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি তৈরি করে এসব ছড়িয়েছে একটি গোষ্ঠি।
তার অভিযোগ, আবদুল আজিজ নামে এক লোক জকিগঞ্জের হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্ঠা করছিলো। তিনি এসবের প্রতিবাদ করায় তার বিরুদ্ধে ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে ধর্ম নিয়ে লেখা হয়। এবং পরে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়।