একদিকে স্বাধীনতার ৫১ বছর, অন্যদিকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মৌলভীবাজারের জুড়ীর প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম চৌধুরীর ৫১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।
ভারতের শিলচরের মধুরবনে শায়িত জাতীর এই শ্রেষ্ট সন্তানের কবর দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের বটনীঘাট গ্রামের আব্দুস সাত্তার চৌধুরীর বড় সন্তান আব্দুর রহিম চৌধুরী পাকিস্তান মুজাহিদ বাহিনীতে ছিলেন।
একাত্তরে দেশ মাতৃকার টানে তিনি সবকিছু ত্যাগ করে যোগদেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। ২৫ বছর বয়সের এই টগবগে যুবক ওই বছরের এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে একবার বাড়ি এসে সেই যে বিদায় নিয়ে যান আর বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁর।
সহকর্মী মুক্তিযোদ্ধারা জানান, যুদ্ধ চলাকালে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে প্লাটুন টু আইসি রহিমসহ অন্য যোদ্ধারা ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে সিলেট শহরে প্রবেশ করেন।
এ সময় পাকিস্তানী আর্মির হামলার মুখে মুক্তিযোদ্ধারা টিকতে না পেরে গোলাপগঞ্জ থানার হেতিমগঞ্জ এলাকার ভূইটিকর গ্রামে আশ্রয় নেন।
২৩ এপ্রিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১০৪ ব্যাটালিয়নসহ মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী বাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমন চালালে পাকিস্তানী বাহিনী বিমান থেকে শেলিং করতে থাকে। শেলিংয়ের স্পিলিন্টারের আঘাতে আব্দুর রহিম চৌধুরী ও বিএসএফ হাওলাদার আনন সিংহ মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হন।
৪নং সেক্টরের রানীবাড়ী সাব সেক্টর কমান্ডার সহযোদ্ধা এম এ মুমিত আসুক দ্রুত তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য ভারতের করিমগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যান।
কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় চিকিৎসক অমিও সোম এর পরামর্শে তাঁদেরকে শিলচর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে ২৫ এপ্রিল রাত ২ টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম চৌধুরী। পরদিন ২৬ এপ্রিল জানাজার নামাজ শেষে শিলচরের মধুরবন এলাকায় তাঁর লাশ দাফন করা হয়। ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর বাংলাদেশে এনে নিজ গ্রামে তাঁর জন্মদাতা পিতার কবরের পাশে হস্তান্তর করার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ জুড়ীবাসীর একান্ত দাবী।