২০২২-১২-০৪ ০০:৩৬:০১ / Print
৪ ডিসেম্বর। আজকের এই দিনে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পাকহানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদারবাহিনীকে হটিয়ে উপজেলাকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করে উল্লাসে মেতে উঠেন মুক্তিযোদ্ধা-জনতাসহ সর্বস্থরের মানুষ দলে দলে নেমে আসেন রাস্তায়।
পাক-হানাদারবাহিনী ও তাদের দোষরা পালিয়ে যায়। জয়বাংলা শ্লোগানে সেদিন মুখর হয় উপজেলা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাকামী বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রেখে বর্বর পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে বরবর হানাদাররা ৪ডিসেম্বর ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
এই দিনই তাহিরপুরে ওড়ানো হয় লাল সবুজের বিজয় নিশান। হানাদার মুক্ত দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে রবিার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মস‚চির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা।
তাহিরপুর উপজেলার বীর নগর গ্রামের পাকহানাদার বাহিনীর আতংক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঘা জানান,তৎকালিন সময়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা ৫নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সাব সেক্টরের বড়ছড়া,টেকেরঘাটের অধীনে ছিল। এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত জেগে যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীদেরকে পরাজিত করেন।
সর্বশেষে উপজেলা সদরের ভাটি তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন কাচারীতে অবস্থানরত পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তারা নানা পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোর সারে ৪টার মেজর মুসলেদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে পাক হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে পাক হায়েনারা নিজেদের কজীবন বিপন্ন ভেবে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এসংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আনন্দে সবার মুখে উচ্চারিত হয়‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ প্রতিধ্বনি। শুরু হয় আনন্দ মিছিল। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে সমগ্র উপজেলা। এ যেন এক অন্য রখম অনুভুতি যা বলে প্রকাশ করা যাবে না বলে জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
৪ডিসেম্বর আমাদের সকলের জন্য অনেক গৌরবের ও মর্যাদার ভুলার মত নয়। তাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা এবার ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছি বলে জানান,মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও উপজেলা আ,লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান খেলু মিয়া।
তিনি আরও বলেন,প্রতি বছরের মত এবারও হানাদার মুক্ত দিবসটি পালনের জন্য উৎসব মুখর পরিবেশে মধ্য দিয়ে স্মরণীয় করে পালনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা জানান,হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হবে।