শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইংরেজী, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা ENG

অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ সিলেট থেকে আবারও শুরু হলো: গণসমাবেশে ফখরুল

স্টাফ রিপোর্ট::

২০২২-১১-১৯ ০৬:২৯:৩২ /

ছবি তুলেছেন আমাদের আলোকচিত্রি মো. সোহেল আহমদ।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,গত ১৪ বছরে এই সরকার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনগনের আদালতে।

মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেয়ার অপরাধে এই সরকারের বিচার হবে।’উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা একটি যুদ্ধ শুরু করেছেন। এই যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ, অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস।

আজকে এই সৈরচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।’ তিনি আরো বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবে তাদের চিহ্নিত করা হবে।

তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।’সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাধারন মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক শ্রমিক কিন্তু এখন শান্তিতে নেই। গতকালও চিনির দাম, তেলের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। মানুষ এখন খেতে পারে না।

তিন কোটি মানুষ বেকার। অথচ তারা ১০ টাকা দামে চাল খাওয়াবে বলেছিলো।‘ ৭০ /৮০ টাকায় চাল কিনে খাচ্ছে মানুষ। ফখরুল বলেন, ‘সরকার এখন মামলা খেলা করছে। কোন কিছুই ঘটে নাই। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আবার হুমকি দেয়, হেফাজতের মতো অবস্থা হবে।’আমি বলতে চাই, ‘হুমকি ধামকিতে কাজ হবে না।

জনগন আজ জেগে উঠেছে। জনগন বিজয় ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না।’‘প্রধানমন্ত্রী কেবল সংবিধানের দোহাই দেন। এই সংবিধান তো তিনি সংশোধন করিয়েছেন। এই সংবিধান আমরা মানি না। আর যদি একটি মিথ্যে মামলা দেয়া হয় তবে জনগন তা প্রতিহত করবে।’ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেশে শান্তি চাই।

অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এক- সরকারের পতন চাই। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে। এই দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই অভিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যবর্তী সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।‘

সকল দলকে আমরা আহ্বান জানাই, আসুন আমরা একাত্তরের মতো এক হই। এই দানবীয় সরকারকে সবাই মিলে পরাজিত করি।’দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ও নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিএনপির এ গণসমাবেশ হয়েছে। গণসমাবেশ শুরু হয় সকাল ১১টা থেকে।

তিনি বলেন- আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট-দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাদের পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর পরিচালনায় শুরু হওয়া সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন- ‘ভোলায় আব্দুর রহিম, নূরে আলম নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান এবং মুন্সীগঞ্জে শাওনকে এই সরকারের পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী হত্যা করেছে। তারা মনে করছে আগের মতো হত্যা করলে সবকিছু থেমে থাকবে, কিন্তু থেমে থাকেনি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে।

অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ বেশি জনসমাগমের মাধ্যমে সফল হচ্ছে।’ সকল রাজনৈতিক দল ও মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন- ‘আসুন এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান- আমরা সকলে এক হয়ে যেভাবে ৭১ সালে লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম সেইভাবে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করি। জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করি।’

তিনি সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন- ‘সিলেটের ইতিহাস যুদ্ধের ইতিহাস। এ সিলেটের মাঠি পবিত্র। যেখান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এই সিলেটের কর্নেল এমএজি আতাউল গনী ওসমানী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৭১-এর ডিসেম্বরে এ সিলেটকে মুক্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।’

সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন- ‘আপনারা অনেক সৌভাগ্যবান যে আমরা যার নেতৃত্বে কাজ করছি, সে আপনাদের জামাতা। এটা আমাদের গর্ব।’ তিনি সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন- ‘আপনারা একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন। আজ এ যুদ্ধ আপনাদের নতুন যুদ্ধ।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদী লুনা,

উপদেষ্টা ডা. এনামুল হক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন,

সহ কৃষি ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

এ জাতীয় আরো খবর

বিএনপির সোমবারের হরতাল পিছিয়ে ১৯ ডিসেম্বর

বিএনপির সোমবারের হরতাল পিছিয়ে ১৯ ডিসেম্বর

শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ওসমানী বিমানবন্দরে সংবর্ধিত

শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ওসমানী বিমানবন্দরে সংবর্ধিত

আবারও বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

আবারও বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

সিলেট-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন চাইলেন জগলু চৌধুরী

সিলেট-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন চাইলেন জগলু চৌধুরী

আবারও ৪৮ ঘন্টার অবরোধ ডাকল বিএনপি

আবারও ৪৮ ঘন্টার অবরোধ ডাকল বিএনপি

সিলেটে সম্মেলনে এমপি ফখরুল: দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির উন্নয়নের কথা ভুলে নি

সিলেটে সম্মেলনে এমপি ফখরুল: দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির উন্নয়নের কথা ভুলে নি