২০২২-১১-১৭ ১৫:০১:০৯ / Print
আর একদিন পরেই সিলেট বিএনপির গণসমাবেশ। বুধবার রাত থেকেই মাঠে অবস্থান করতে দেখা যায় নেতা কর্মীদের। বৃহস্পতিবার রাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ। একপাশে স্পিকারে বাজছে গান। সমাবেশ ঘিরে তৃণমূল বিএনপির মধ্যে চাঙ্গা ভাব এসেছে।
তারা মাদ্রাসার মাঠে অবস্থান নিয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। সমাবেশস্থলে উপস্থিত নেতারা কর্মীরা জানান- ‘সরকার দেশের অন্যান্য গণসমাবেশ দেখে ভয়ে আছে। এজন্য সরকারের নির্দেশনায় পরিবহন সংগঠনগুলো স্থানীয়ভাবে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এদিকে অনেক নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার রাতের মধ্যে পুরো সিলেট বিভাগের লক্ষাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আলিয়া মাঠে এসে জড়ো হবেন। সমাবেশস্থলে ঘুরে দেখা গেছে- ‘মাঠের মঞ্চের দিক ছাড়া বাকি তিন দিকেই শামিয়ানা টানিয়ে জেলা-উপজেলা ও থানাভিত্তিক বড় বড় ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতাদের ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে এসব ক্যাম্প।
সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা শনিবারের আগে এসে পড়লে নিজ এলাকার নেতার ক্যাম্পে রাত্রি যাপন করবেন। ওই নেতার উদ্যোগেই তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন ক্যাম্পে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের দুই দিন আগে হাজারো নেতাকর্মী আগাম চলে আসায় আশপাশের হোটেল ও সমাবেশের প্যান্ডেলে অবস্থান নিয়েছেন।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেটজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট ডাকার কারণে আগেভাগেই বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে এসে হাজির হয়েছেন। রাত ১২ টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে হাজারো নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করতে ২ দিন আগে চলে এসেছেন।
হবিগঞ্জ থেকে আসা বিএনপি কর্মী সানা মিয়া বলেন, আমাদের জেলায় আগামীকাল থেকে দুদিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তাই ধর্মঘটের আগেই সমাবেশে চলে এসেছি। বিএনপি নেতারা জানান, পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা বাধার কারণে আগেভাগে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নেতাকর্মীরা সিলেটে আসতে শুরু করেছেন। তাদের জন্য এসব ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে।
বিভিন্ন অঞ্চল ও অঙ্গসংগঠনগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ক্যাম্প করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পেই আগে আসা নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবেন। তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়প নেতাকর্মীরা মাঠে আসতে শুরু করেছেন। সময় যত যাবে তত এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
একসময় এটি গণজোয়ারে পরিণত হবে। মঞ্চের ডানপাশে পর্দা দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ছোট ছোট ঘর। ঘরের উপরে ব্যানারে লেখা রয়েছে 'ক্যাম্প'। এসব ক্যাম্পের ভেতরে রাতেই রান্না করা হয়। বিকেলে আলীয়া মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির জন্য নির্ধারিত ক্যাম্পে বসে সবজি কাটছেন এক নারী।
রাতে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বড় হাড়িতে চলছে রান্নার আয়োজন। হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা মাঠের চারদিকে ঘুরাঘুরি করছেন। হবিগঞ্জের ক্যাম্পে বসা ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা বি্এনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জিকে গৌছ।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মী আজকেই সিলেটে চলে এসেছেন। এখানে তাদের বিশ্রাম ও খাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
মাঠের ভেতরে নির্মান করা হয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি স্টল। একটি স্টলে স্তুপাকারে রাখা হয়েছে পানির বোতল। মাঠে আসা যে কেউ বিনামূল্যে সেখান থেকে পানি নিয়ে যেতে পারছেন।
এই স্টলের উপরের দিকে টানানো ব্যানার দেখে জানা গেলো, নেতাকর্মীদের ফ্রি পানি বিতরণের এই ব্যবস্থা করেছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজিনা নাসির। তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমানের পুত্রবধূ।
তার স্বামী নাসের রহমান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সমাবেশ স্থলে নেতাকর্মীদের ভিড় লেগে যায় সময় সময় তা বাড়তে থাকে।
বিকেলে বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ড. মঈন খানসগহ কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পরিদর্শন করেন। এসময় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।