২০২২-০৯-২৭ ০৭:৫০:০৭ / Print
সিলেটের গোয়াইনঘাটে লোকালয় থেকে একটি বিলুপ্ত প্রায় লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গুচ্ছগ্রামের একটি বসত বাড়ি থেকে জাফলং বন বিটের লোকজন লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করেন।
উদ্ধার অভিযানে জাফলং বনবিট কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল'র নেতৃত্বে বনবিভাগের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন, কয়েকদিন ধরে জাফলং গুচ্ছগ্রাম এলাকায় জনৈক সাত্তার মিয়ার বাড়িতে একটি লজ্জাবতী বানর আটকে রাখা হয়েছে।
খবর পেয়ে তাঁরা সাত্তার মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে বুঝিয়ে বানরটি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তাকে জানানো হয় প্রচলিত বন্য প্রাণী আইনে যেকোনো বন্য প্রাণী লালন, পালন, ধরা এবং হত্যা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। পরে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিনকে অবগত করে জাফলং বনবিটের লোকজন গিয়ে তার বাড়ি থেকে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করেন।
বন্য প্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা গেছে, লজ্জাবতী বানর লাজুক বানর নামেও পরিচিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে বিপন্ন প্রায় প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। এটি দেশের ক্ষুদ্রতম বানর জাতীয় প্রাণী। লজ্জাবতী বানর মূলত বাংলাদেশে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এগুলো নিশাচর ও বনের গভীরে উঁচু গাছে থাকতে পছন্দ করে।
দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে ঘুমিয়ে কাটায়। বিরল, নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনে সহজে চোখে পড়ে না। এগুলো গাছে গাছেই থাকে এবং সহজে মাটিতে নামে না। অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাফেরা করে। এগুলো সাধারণত ফল, পাতা, উদ্ভিদের কষ বা নির্যাস ইত্যাদি খায়।
মাঝেমধ্যে বড় কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম-ছানা, সরীসৃপও খেয়ে থাকে। এ বিষয়ে জনৈক ছাত্তার মিয়া বলেন কয়েকদিন আগে আমার বাড়ির পাশের নারকেল গাছে বানরটিকে পেয়ে আমি ও আমার পরিবার লালন পালন করে আসছিলাম।
আজ বন বিভাগ কতৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়ে বুঝিয়ে বললে বানরটি আমি তাদের হাতে তুলে দেই। সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিন জানান, লজ্জাবতী বানরটিকে উদ্ধার করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে যদি মনে হয় প্রাণীটি সুস্থ আছে তাহলে খুব শিগ্রই অবমুক্ত করা হবে। নয়তো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে সুস্থ হওয়ার পর অবমুক্ত করা হবে।