২০২২-০৮-২১ ১৭:১৬:৩৮ / Print
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সদরে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল নুর আহমদ খান ও সাধারণ সম্পাদক অরবিন্দু দাশ নিয়মমাফিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন ভালভাবে।
কিন্তু হঠ্যৎ করে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিক্তা বেগম বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত (১৮জুলাই) দুপুরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রায়হান কবিরের কাছে।
এরপর থেকে এই বিদ্যালয়টি বন্ধ রয়েছে। এদিকে উপজেলা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল নুর আহমদ খান ও সাধারণ সম্পাদক অরবিন্দু দাশ উল্টো অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলেন,বিদ্যালয়ের নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে না পারায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিক্তা বেগম মনগড়া অভিযোগ তুলেছেন যারা সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তারাও সম্প্রতি দু পক্ষের সাথে কথা বলেছেন তদন্ত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,২০২১ সালের ২০ অক্টোবর তাহিরপুর উপজেলা সদরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে একটি গৃহ নির্মাণ করে এই স্কুলের উদ্ধোধন করেন সুনামগঞ্জ ১আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির,সহ উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
বিদ্যালয় পরিচালনায় কমিটিও করা হয়। বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী মিলিয়ে ১৪০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বলেন,সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধের কারনে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ক্লাস হচ্ছে না তা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
বিদ্যালয়টি চালু করার দাবী জানাই। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিক্তা বেগম বলেন,আমরা সকল শিক্ষক বিনা বেতনে পাঠ্যদান করে আসছি। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের সকল শিক্ষকদের কাছ থেকে নানাভাবে টাকা নিয়েছেন ও অনিয়ম করছেন।
আমরা সকল শিক্ষক নিরুপায় হয়ে একটা বিহিত করার দাবী জানাই। অভিযোগের বিষয়ে সভাপতি আবুল নুর আহমেদ খান বলেন,স্কুল করার সময় ২০১৮ এবং ২০১৯ এর নীতিমালা দেখেই করা হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তার কোন প্রমান দেখাতে পারবে না প্রধান শিক্ষক। কারন আমি কোন অনিয়ম করেনি। বরং বিদ্যাল্যটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছি। আর প্রধান শিক্ষক নিজের স্বার্থ হাসিল করতে, আমাকে অপদস্ত ও বিদ্যালয়টিকে ধবংসে মেতেছে উঠেছেন।
আমি খুব কষ্ট করে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এই অবস্থায় উঠিয়ে এনেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হান কবির জানান,উপজেলা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি তার প্রেক্ষিতে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি।
তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তাই কোন ধরেনের ঝামেলা না হয় তার জন্য বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছি। খুব দ্রুতই বিদ্যালয়টি চালু হবে।