
২০২২-০৮-১৪ ১১:৫১:৪০ / Print
সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারের পুলিশ লাইন্স লুসাই গির্জা সমিতির জায়গা ও তাদের কবরস্থানের ভূমি জালিয়াতি করে সাফকাবালা দলিল সৃষ্টি, জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও নামজারি করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এবার কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে।
নানা কারণে আলোচিত আইনজীবী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের দায়ের করা মামলায় এবার তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রোববার বিকালে মামলার শুনানী শেষে সিলেট মহানগর দায়রা জজ মো. আব্দুর রহিম তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে চেক ডিজঅনার ও প্রতারণা মামলায় দুইবার জেল খাটেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। ২০২১ সালের ২৯ জুন তার বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন দুদক সিলেট জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইসমাইল হোসেন।
মামলায় জেলা বারের সিনিয়র আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম ছাড়াও সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার, ভূমি অফিসের কানুনগো ও তহশিলদারকে আসামি করা হয়। সাবরেজিস্ট্রার সিলেট থেকে বদলী হওয়ার পর পলাতক থাকলেও মামলায় জামিনে ছিলেন সিরাজসহ অপর দুইজন।
সম্প্রতি পুলিশ লাইন্স গির্জা সমিতির চেয়ারম্যান জমিংথাংগা লুসাই হুমকীর অভিযোগে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। পাশাপাশি আদালতে জামিন বাতিলেরও আবেদন করেন। রোববার জামিন আবেদন শুনানী শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী নাহিদা।
জানা গেছে, রিকাবিবাজারের সিলেটে জেলা স্টেডিয়ামের সামনে গির্জার জায়গা ও কবরস্থান দখল করে ইম্পালস টাওয়ার গড়ে তুলেন আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম। যদিও বর্তমানে টাওয়ারটি তার হাতছাড়া হয়ে গেছে। ১৯৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি সিরাজুল ইসলাম সাক্ষি সেজে ছাফিয়া আহমদ নামের এক মহিলার নামে গির্জার ১৫ শতক জায়গা ইজারার জন্য একটি বয়নাপত্র সম্পাদন করেন।
ওই বায়নাত্র রেজিস্ট্রি না করে সিরাজুল ইসলাম ২০০৬ সালে ২৪ ডিসেম্বর ইজারা বলবৎ থাকাবস্থায় গীর্জা সমিতির অবশিষ্ট ৮০ শতক জায়গা একটি সাফকাবালা দলিল (নং ১৮৫২২/০৬) নিজে সম্পাদন করেন। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
পাশাপাশি ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন ইজারাদার ও গির্জা সমিতির লোকজন। তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনসহ নানা অভিযোগ ও মামলা করা হয়। একটি মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর আদালত তার সাফকাবালা দলিল বাতিল করেন।
পরবর্তীতে টাওয়ারে বিনিয়োগকারীসহ গির্জা সমিতির সাথে সিরাজুল ইসলামের একাধিক মামলা হয়। পাশাপাশি গির্জা সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে দুদক সিরাজুল ইসলামসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।