শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইংরেজী, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা ENG

প্রাণ ফিরেছে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে

এম এম সামছুল ইসলাম, জুড়ী (মৌলভীবাজার)

২০২২-০৫-০৬ ০৮:২০:৫৩ /

ঈদের ছুটিতে প্রকৃতি কন্যা মাদবকুন্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।করোনা সংক্রমণের কারণে গত আড়াই বছর দেশের অন্যতম এ পিকনিক স্পটটি ছিল প্রায় নিস্তব্ধ। এতে পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী, ইজারাদার ও এর সাথে জড়িত সবাই ছিলেন চরম দুর্দিনে। তবে এ চিত্র পাল্টেছে এবারের ঈদে।


ঈদুল ফিতরের ছুটিতে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার মাদবকুন্ড জলপ্রপাত এলাকা ভরে উঠে পর্যটকের পদচারণায়। ফলে এখানকার ব্যবসায়ী, ইজারাদারসহ সবার মুখে ফিরেছে তৃপ্তির হাসি।
ঈদের দিন থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মাদবকুন্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ১৫ হাজার পর্যটক প্রবেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।


সরেজমিন মাধবকুন্ড ইকোপার্কে প্রবেশের আগে সড়কে প্রায় ১ কিলোমিটার যানজটের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। সেখানে যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। মাদবকুন্ড ইকোপার্ক এলাকায় পৌঁছার পর বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বিভিন্ন পণ্যের দোকান, খাবার হোটেলগুলোতেও ভিড় জমেছে।


জলপ্রপাত এলাকায় প্রবেশের পর দেখা গেছে পর্যটকপ্রেমিদের আনন্দ-উচ্ছাস। দল বেঁধে মাধবকুন্ডের জলে নেমে হইহুল্লোড় আর আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

কেউ কেউ ঝরনার জলে সাঁতার কাটছে আবার অনেকে দাঁড়িয়ে প্রায় ২শ ফুট ওপর থেকে অবিরাম ঝরনার জলপতনের দৃশ্য ও আশপাশের সবুজ প্রকৃতি উপভোগে ব্যস্থ সময় পার করছেন। স্মৃতিময় দৃশ্যগুলো ধরে রাখতে এসব দৃশ্য তারা ক্যামেরা বন্দি করছেন।


স্বজনদের নিয়ে মাধবকুন্ডে এসেছেন স্থানীয় তরুণ কবি এম রাজু আহমদ বলেন, মাদবকুন্ড আমাদের পাশের উপজেলায়ই। তবে সব সময় আসা হয় না। ঈদ উপলক্ষে দেখতে আসলাম, অনেক ভালো লাগছে।

দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন। সবাই আনন্দ উপভোগ করছেন। আমাদেরও ভালো লাগছে। এখন বর্ষার সময়, প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ। তাই জলপ্রপাত ও আশপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য, খাসিয়াপুঞ্জি এবং চা বাগান ও স্থানীয় মানুষকে আকৃষ্ট করছে, তৃপ্তি দিচ্ছে।


তরুণ ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক সুলতান আহমদ বলেন, ঈদে অবসর থাকায় ঘুরতে এসেছি। ভালো লাগছে। তবে পর্যটকদের জন্য এখানকার ব্যবস্থাপনাটা আরও উন্নত করা জরুরী। তাহলে পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে।
 

আলোকচিত্রী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, করোনাকালীন প্রায় আড়াই বছর মাদবকুন্ডে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় খুব কষ্ট হয়েছিল। এবারের ঈদে কোনো লকডাউন নেই। তাই লোকজন আসছেন। এরকম লোকজন আসা অব্যাহত থাকলে আমরা ছবি তুলে আয়-রোজগার করতে পারব।
 

ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, করোনার সময় ঈদে লোকজন ছিল না। আমাদের ব্যবসায় মারাত্মক মন্দা দেখা দিয়েছিল। এরপর বিধিনিষেধ উঠলে মাদবকুন্ড খুলে দেয়া হয়। তখন আস্তে আস্তে পর্যটকও আসেন। কিছুটা স্বস্থি ফিরেছে আমাদের মাঝে। এবার ঈদের দিন থেকে অনেক লোকজন আসছেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। গত আড়াই বছর ঈদে বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে, আশা করছি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারব।


মাধবকুন্ডে ট্যুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বে থাকা এসআই মো: মিজানুর রহমান বলেন, ঈদের দিন থেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছ। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।

এছাড়া আমরা মাধবকুন্ড ভ্রমণে আসা কিশোরদের মাদক সেবন, ইভটিজিং ও অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মাইকিং করে সচেতন করছি।
 

বড়লেখা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, ঈদের দিন মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আনুমানিক ১৫ হাজারের মতো পর্যটক ভেতরে প্রবেশ করেছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, বনবিভাগ ও ইজারাদারের লোকজন কাজ করছেন।

 

এ জাতীয় আরো খবর

প্রাণ ফিরেছে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে

প্রাণ ফিরেছে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে

পাথুরে জনপদে পর্যটকের ঢল

পাথুরে জনপদে পর্যটকের ঢল

পর্যটন দিবসে সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের র‌্যালি ও আলোচনা

পর্যটন দিবসে সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের র‌্যালি ও আলোচনা

পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা : দোয়ারাবাজারের বাঁশতলা

পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা : দোয়ারাবাজারের বাঁশতলা

 সুন্দরবন পর্যটকের জন্য খুলছে ১ সেপ্টেম্বর

সুন্দরবন পর্যটকের জন্য খুলছে ১ সেপ্টেম্বর

খুলছে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র : মানতে হবে নির্দেশনা

খুলছে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র : মানতে হবে নির্দেশনা