বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইংরেজী, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার বাংলাদেশ

আল আমিন ::

২০২২-০৩-২৬ ০২:৪৫:১৬ /

আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিবাহিত করেছি, এই ভেবে আমার অহংকার হয়, আমি গর্ব করি। ২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার বিজয়ের পঞ্চাশ বছর উদযাপন করেছে। ২০২০-২০২১ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ তথা জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ বা জন্মশতবার্ষিকী দেখার সুভাগ্য আমার হয়েছে। অর্ধশত বছর পূর্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল সবুজের পতাকার বিজয় হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা হয়। কোভিড-১৯ কে উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যব্যাধি মেনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোটি বাঙালি মহাউৎসবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে।

আমি এই মহাউৎসবগুলোর আয়োজন দেখেছি এবং আনন্দ অনুভব করেছি। এসময়টি আমার কাছে এক অনুভূতিময় আনন্দের উজ্জ্বলময় বছর হিসেবে আমার স্মৃতিতে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষ এখন উন্নয়নের সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। নয় মাসের সংগ্রামের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ আজ মহাউৎসবে উন্নয়নের পথে। আগামীর বাংলাদেশ অনুভূতিময় এক আনন্দের অধিকতর উজ্জ্বল দিনের অপেক্ষায়।

বাংলাদেশ আজ নব জাগরণে, অযুত সম্ভাবনার মুহূর্তে। স্বাধীনতার চেতনার রূপ সংবিধানের জাতীয় চার মূলনীতি- গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের আদর্শে। এজন্য আজকের বাংলাদেশ অতীতের বাংলাদেশকে উহ্যরেখে এখন সম্ভাবনাময় আগামীর উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশ এখন সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে।

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশে উন্নত হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, জলবায়ুর পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ রাষ্ট্র সবক্ষেত্রেই সফলতার দিকে হাঁটছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, স্বাধীনতার বাংলাদেশ, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদমুক্ত বাংলাদেশ এবং তারুণ্যের চোখে আগামীর উন্নয়নের বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উপলব্ধি করছি।

এজন্য এবছর গুলো আমাদের কাছে অধিকতর তাৎপর্যবহন করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে লক্ষ্যনীয়, রাষ্ট্র দেশের গৃহহীন মানুষগুলোকে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানসহ অন্যান্য মৌলিক সুবিধা প্রদান করছে। একেকটি গ্রামকে উন্নত শহরে রুপান্তর করছে। নগর এবং গ্রামে প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভাট করে দিচ্ছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে। বছরের পহেলা দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করছে।

অর্থনৈতিক অগ্রগতি, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন করছে এবং অন্যান্য উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে, উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে বিশ্বের দরবারে নতুন মর্যাদায় অভিষিক্ত হচ্ছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশানুযায়ী দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হচ্ছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় দেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আরো দ্রুতগতিতে লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে।

এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আরো দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে এবং দেশের জনগণের জীবনমান শতভাগ সমৃদ্ধ হবে। আজকের বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

আমরা চাই, দেশের সকল নাগরিকের সুবিধা সুনিশ্চিত, অসহায়ের মানুষের সহায়, তথ্য প্রযুক্তি প্রসারে হাতের মুঠোয় বিশ্ব, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ, কৃষকের মুখে হাসি, উড়াল সেতু, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, সুরমা সেতুু, প্রশস্ত চারলেনের রাস্তা, গৃহহীনদের নিশ্চিত আবাসন, দরিদ্রের ঘরে বিনামূল্যে চাল, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্ত সম্মান, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার, সবার জন্য সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, ভয়াবহ মাদক নির্মূল, বয়স্ক ভাতা নিশ্চয়তা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা চলমান থাকুক।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগামীর উন্নয়নের বাংলাদেশকে নুুন রুপে দেখার প্রত্যাশা হলো, আমাদের দেশ হবে প্রাচুর্যে পূর্ণ। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। নিজেদেরকে সৃজনশীলতায় সৃষ্টি করবে উদ্দীপ্তভাবে। নতুন শক্তিতে নিজেদের ভাগ্য গড়ার প্রত্যয়ে আস্থাশীল হবে নিজের আত্মপরিচয়ে। আমরা স্বপ্ন দেখি একটি নিরাপদ বাংলাদেশের, একটি দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের।

আমরা চাই, আমাদের সমাজ এবং রাষ্ট্র হবে দুর্নীতিমুক্ত। স্বার্থপরতা এবং সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পশূন্য দেশ হবে। দেশের নাগরিক দক্ষ, সুশিক্ষিত ও সৃজনশীল মানবসম্পদে রুপান্তরিত হবে।

সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ধারা অব্যাহত থাকবে। বেকারত্বকে মানব সম্পদে রুপান্তর করে বিশাল জনসমষ্টির এই দেশ হবে শত সম্ভাবনার এবং প্রগতিশীল রাজনীতির, উন্নয়নে অগ্রগামী, শান্তিপূর্ণ, কল্যাণমুখী এবং সৃজনশীল এক জনপদরূপ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শক্তি হিসেবে কাজ করেছিল তারুণ্য।

তারুণ্যের মনে, শক্তিতে এবং ভাবনায় থাকে দেশপ্রেম। একাত্তরের তরুণদের মধ্যে যেমন ছিল একতা, সাহস, ঐক্য। তেমনি এখানকার তরুণদের মধ্যে আছে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া, শিক্ষা ও জ্ঞানভাণ্ডার এবং শক্তি। তরুণদের এই চেতনার মনোবল, উৎসাহ ও উদ্দীপনায় অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতার সংগ্রামের বিজয়।

আমাদের বিশ্বাস, তারুণ্যের নেতৃত্বের গুনাবলী দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার সুফল বয়ে আনতে সক্ষম হবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। আজকের তরুণরা শিক্ষায় ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেধা ও সাহস দিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণ করবে।

দেশের তরুণ প্রজন্ম স্বধীনতায় বিশ্বাসী, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে শ্রদ্ধা করে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারও প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ক্ষুধা ও দারিদ্র অবকাঠামোবিহীন বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা নিতান্তই সহজ কাজ ছিল না। সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার আটটি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে।

শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার কমানো। স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অনেক তাৎপর্যবহন করেছে। সরকার শিক্ষাকে দেশের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শতভাগ ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ করছে।

দেশে একসাথে ছাব্বিশ হাজার একশত তিরানব্বইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুন করে জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চাকরি সরকারীকরণ, বেসরকারি স্কুল ও কলেজকে এমপিওভুক্তকরণ, শিক্ষায় সুবিধাবঞ্চিত গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১২ প্রণয়ন এবং শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করাসহ নানা প্রকল্প গ্রহন করেছে এবং তা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

ত্রিশ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে লাল সবুজ পতাকার স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের যেমন অর্জন রয়েছে তেমনি রয়েছে ব্যর্থতা। এরপরও সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ, বিশ্বের বুকে এ কথা বারবার উচ্চারিত হচ্ছে।

বাংলাদেশও সেই সম্ভাবনাটুকু কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। যদিও দূর্নীতি, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, জঙ্গিবাদসহ নানা সমস্যার ফলে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে এই দেশকে।

শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রচেষ্টা, নারীর অধিকার সংরক্ষণ, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ এবং দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলাসহ সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করার মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনুার সুফল ভোগ করা সম্ভব হবে।

দুর্নীতির মূল উৎখাত করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ সে পথেও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে শক্তিশালী করে প্রযুক্তি মূলধন ও কর্মসংস্থান তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করে বেকারত্ব ও দারিদ্রের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছবে।

শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাবলিল উৎপাদন রপ্তানী বাণিজ্য বৃদ্ধি করে সম্পদের সুষম বণ্টন এবং অর্থনৈতিক ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে সম্পদের এবং অর্থের প্রবাহ স্থির করে অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

রাষ্ট্রের মৌলিক অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা, আইনগণ সহায়তা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং রাজনীতিবীদদের পারস্পরিক সহনশীলতা সৃষ্টি করে স্বাধীনুাকে উজ্জীবিত করে বিজয়ের সোনার বাংলাকে প্রজ্জ্বলন করার শপথ তরুণ প্রজন্মের।

আমাদের দেশের শিক্ষার মানকে যুগোপযুগী ও যথাযথ করে তুলে যুগের সাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। দেশে শতভাগ শিক্ষিত মানুষ হবে।

শিক্ষার আলোয় আলোকিত সমাজে সুস্থ সংস্কৃতি ও মননশীলতার আবহ বিরাজ করার উপযোগী হবে। বাংলাদেশে উদার নৈতিক সমাজে মানুষ পাবে আত্মবিকাশে ইতিবাচক পরিবেশ।

বাংলাদেশ প্রগতিশীল সমাজ, ধর্মীয় গোড়ামি ও কুসংস্কারমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে শিল্প প্রযুক্তির শীর্ষে উঠে শিল্পায়নের চূড়ায় অর্থনৈতিকভাবে এগুতে থাকবে।

প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহারে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। প্রতিটি মানুষের বেকারত্বের হাত হবে বলিষ্ঠ কর্মীর হাত। তখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে তরুণ প্রজন্মকে মানব সম্পদে পরিণত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে উপলব্ধি করতে পারবে এবং শতভাগ বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ করবে।

বাঙালির আত্মত্যাগ ও আন্দোলন সংগ্রামের সুদীর্ঘ রক্তাক্ত পথ অতিক্রম করে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ সংগ্রাম মৃত্যু ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাঙালিরা বিজয় লাভ করেছিল।

স্বীকৃতি লাভ করেছিল লাল সবুজের পতাকা এবং একটি গর্বিত সার্বভৌমত্ব। স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেই দিন নিপীড়িত ও বঞ্চিত বাঙালি জনগণের শোষণ থেকে মুক্তির প্রত্যাশা অর্জনে পেয়েছিল এক নতুন দিক নির্দেশনা এবং নতুন মাত্রা। স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির সংগ্রামে। বাঙালির জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ সবচেয়ে বেশি তাৎপর্য।

স্বাধীন জীবনযাপন লাভের প্রত্যাশাকে বাস্তবরূপ ধারণ করার প্রয়াস ঘটিয়েছিল এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা। বাঙালির প্রতিজ্ঞায় এবং সংগ্রামের অঙ্গিকারে উদ্দীপ্ত হয়ে বাঙালির আত্মপরিচয়ে গৌরবে উজ্জ্বল মহিয়ান হয়ে উঠেছিল এবং নিপীড়িত বঞ্চিত ও শোষিত মানবের মুক্তির স্বপ্ন পূরণ করে স্বাধীনতার চেতনার মহিমায় অমর হয়েছিল এই স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়। জাতীয় ঐক্য এবং দেশপ্রেমের অনুভূতিতে স্বাধীনতা দিবস বাঙালির চেতনার অর্জিত সাফল্যের প্রেরণা।

স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে বাঙালি জাতি আনন্দে গৌরবে শ্রদ্ধায় উজ্জ্বীবিত হয়। বর্তমান প্রজন্ম আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের সফলতা এবং ব্যর্থতা দেখার চেষ্টা করে।

আত্মজিজ্ঞাসায় জেগে তুলে নিজের বিবেককে। স্বাধীনতার শোষণের গ্রাস থেকে নিজেকে মুক্তির শিক্ষা দেয়। নিজেদেরকে উন্নয়নের পথে স্বাধীনভাবে অগ্রসর হওয়ার পথ দেখে।

মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেয়া, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি রোধ করা, দেশের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করা, মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদান কর্মসূচী বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে আওয়ামী লীগ সরকার অঙ্গিকারবদ্ধ

এবং সে লক্ষ্যে অধিকতর কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা পূনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, বিশেষত দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি, বার্ধক্যকালীন ভরণ-পোষণ ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ গৃহীত অন্যান্য ব্যবস্থা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশের সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা, ইতিহাস বিকৃতি রোধ এবং প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিতকরণ, শহীদদের নাম পরিচয় সংগ্রহ, স্মৃতিস্তম্ভ এবং জেলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে নির্মাণ করছেন।

একটি জাতির জন্য স্বাধীনতা এবং বিজয়ের ইতিহাস যেমন গৌরবের, তেমনি বেদনার। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বিজয়।

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মৌলবাদ দূর করে অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে, ইহা এই সময়ের প্রত্যাশা। দারিদ্র পীড়িত মানুষের অধিকার দুঃখ, ব্যর্থতা ও হতাশা দূর করে একটি অর্থনৈতিক নির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে তরুণ প্রজন্ম। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে শপথ হোক আমাদের। লেখক: কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।

এ জাতীয় আরো খবর

একজন সেলিম আহমেদ ও তার মানবতা

একজন সেলিম আহমেদ ও তার মানবতা

এসএস‌সি '৯৪ ব্যাচের সহপাঠীরা সি‌লে‌টে এক‌ত্রিত হবে ২৪ ডিসেম্বর

এসএস‌সি '৯৪ ব্যাচের সহপাঠীরা সি‌লে‌টে এক‌ত্রিত হবে ২৪ ডিসেম্বর

টেক জায়ান্ট ইনফোসিসে ইয়ুথ ডেলিগেশনের মুগ্ধতা

টেক জায়ান্ট ইনফোসিসে ইয়ুথ ডেলিগেশনের মুগ্ধতা

পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

স্মরণ : বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অভাব 'অনুভব' করেন নগরবাসী

স্মরণ : বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অভাব 'অনুভব' করেন নগরবাসী

বীরের সঙ্গে, বীরবন্ধুর দেশ ভারতের মেঘালয়ে

বীরের সঙ্গে, বীরবন্ধুর দেশ ভারতের মেঘালয়ে