শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইংরেজী, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

শিরোনাম : আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ এপিবিএন সিলেট এর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উদ্বোধন বাংলাদেশী কর্মীদের ভিসা সহজ করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জ অমিত দাস শিবুর রহস্যজনক মৃত্যু কোম্পানীগঞ্জে বাস সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২ সুনামগঞ্জে ট্রাক সিএনজি সংঘর্ষে একজন নিহত দেবাশীষ দেবুর মায়ের মৃত্যুতে ইমজা শোক পরলোকে সাংবাদিক দেবাশীষ দেবুর মা সংবাদ সম্মেলন : কম খরচে জটিল সব চিকিৎসা করা যাবে জীবনজ্যোতি হাসপাতালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করতে আগ্রহী লাফার্জহোলসিম

পুলিশের কাছে নাজমিন: সাব্বির আমাকে জিন্দা লাশ বানিয়ে রেখেছে, অপবাদেই মেয়েকে খুন করি

ষ্টাফ রিপোর্ট ::

২০২২-০২-১০ ০৩:২৭:৪৩ /

সিলেটে শ্বাসরুদ্ধ করে এক বছর ৫ মাস বয়সী শিশু হত্যার ঘটনায় মা নাজনিন আক্তারের (২৮) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে শাহপরান থানায় এই হত্যা মামলা করেন শিশুটির বাবা সাব্বির হোসেন। শাহপরান থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, নাজনিন আক্তার পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তাকে এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আমারা আদালতে তোলা হবে। এরআগে পুলিশের কাছে লোমহর্ষক বর্ণনা দেন নাজমিন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিশুর নাম নুসরাত জাহান সাবিহা। তার বাবা সাব্বির আহমদ সিলেট দক্ষিণ সুরমার বলদি এলাকার বাসিন্দা ও কাতার প্রবাসী। সম্প্রতি সাব্বির দেশে ছুটিতে এসেছেন। কিন্তু সাব্বিরের সঙ্গে নাজমিনের বনিবনা না থাকায় তিনি (নাজমিন) শাহপরাণ এলাকার নিপোবন-৪৯ এ আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সঙ্গে তার ছোট বোন ও আগের স্বামীর ঘরের ১১ বছরের এক সন্তান থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে বুধবার বেলা ২টার দিকে ১৭ মাস বয়েসি শিশু সাবিহার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন নাজমিন। এসময় বিষয়টি দেখতে পেয়ে নাজমিনের কবল থেকে তার বোন ও প্রতিবেশী এক মহিলা শিশুটিকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবিহাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় হাসপাতাল থেকে নাজমিন পালাতে চেষ্টা করলে উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাংবাদিকদের সামনে নিজের শিশুমেয়েকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন নাজমিন। এসময় তিনি বলেন, ২০১৫ সালের মে মাসে সাব্বির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের ৬ মাস পর সাব্বির বিদেশে চলে যান। পরে তিনি শাহপরান এলাকার নিপোবন-৪৯ নং বাসায় থেকে সিলেটের একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতে থাকেন। নাজমিনের অভিযোগ, বিদেশের যাওয়ার পর থেকে স্বামী সাব্বির আর তার খোঁজ নেননি। ভরণ-পোষণও করেননি। বিদেশে থাকা অবস্থায় সাব্বির পরিচিতজনদের মাধ্যমে নাজমিনকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলতেন। এমন অবস্থায় চার বছর পর ২০২০ সালে দেশে আসেন সাব্বির। দেশে এসে নাজমিনকে বুঝিয়ে আবার সংসার শুরু করেন তিনি। তখন নাজমিন গর্ভবতী হন। তাকে গর্ভবতী রেখে সাব্বির আবারও কাতার চলে যান। তবে প্রবাসে যাওয়ার পরপরই গর্ভের সন্তান নিজের নয় বলে দাবি করেন সাব্বির। নাজমিন বলেন, আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু এরপরও সাব্বির আমার বিরুদ্ধে পরিচিত সকলের কাছে কুৎসা রটাতে থাকে এবং আমাকে অপবাদ দিতে থাকে। তবে জন্মের পর মেয়ের চেহারা অবিকল তার বাবার মতো হওয়ায় মানুষের প্রশ্ন থেকে আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। নাজমিন আরও বলেন, সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু আমার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। চার-পাঁচ দিন পর পর শুধু কয়েক মিনিটের জন্য মেয়েকে দেখতে যান। কিন্তু আমি স্ত্রী হিসেবে তাকে কাছে পাইনি। স্বামীর বিরুদ্ধে চরিত্রহীনতার অভিযোগ এনে নাজমিন বলেন, ও পরকীয়া করে না। বহু নারীর কাছে যায়। একজনের সঙ্গে পরকীয়া করলে হয়তো তাকে ফেরাতে পারতাম। কিন্তু সবকিছুর পরে নিজের সন্তানকে হত্যা করলেন কেন পুলিশের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার তো সব শেষ। আমার জীবনকে একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে সাব্বির। নিজের সন্তানকে- আমাকে সময় দেয় না। আমাকে জিন্দা লাশ করে ফেলছে সে। তাই আমার মাথা কাজ করেনি। তার প্রতি ক্ষোভে-কষ্টে মেয়েকে বালিশচাপা দেই। আমি ইমোশন থেকে আমার বাচ্চাটাকে মারছি। কিন্তু বালিশাচাপা দেওয়ার পর আমার আবেগ জেগে ওঠে। আমি আমার মেয়েকে মারার পর তাকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরি এবং অনেক্ষণ কান্না করি। এসময় আমার বাচ্চার হৃদস্পন্দন আমি বুঝতে পারি। ওইসময় বাড়িওয়ালি এসে আমার কাছ থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে নেন। নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে নাজমিন বলেন, আমি কাউকে ফাঁসাবো না। সাব্বিরকেও ফাঁসাবো না। সব দোষ আমার। আমি আমার মেয়েকে খুন করছি। আমার ফাঁসি হোক। আপনারা আমাকে ফাঁসি দিন। অথবা কেউ আমার দুটো হাত কেটে ফেলুন। আপনারা যদি আমাকে শাস্তি না দেন তবে আমি যে কোনো সময় সুইসাইড করতে পারি। নাজনিন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাদেপাশা ইউনিয়নের কালিকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. জিয়া উদ্দিনের মেয়ে। তিনি সিলেটের একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষিকা। গতকাল বুধবার ১৭ মাস বয়সী সন্তানকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। গতকাল বিকেলে হাসপাতাল থেকে নাজমিনকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। একই সময় নাজমিনের স্বামী সাব্বির হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সিলেটসানডটকম_এমসিকিউ

এ জাতীয় আরো খবর

আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জ অমিত দাস শিবুর রহস্যজনক মৃত্যু

উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জ অমিত দাস শিবুর রহস্যজনক মৃত্যু

কোম্পানীগঞ্জে বাস সিএনজি সংঘর্ষে  নিহত ২

কোম্পানীগঞ্জে বাস সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২

দেবাশীষ দেবুর মায়ের মৃত্যুতে ইমজা শোক

দেবাশীষ দেবুর মায়ের মৃত্যুতে ইমজা শোক

পরলোকে সাংবাদিক দেবাশীষ দেবুর মা

পরলোকে সাংবাদিক দেবাশীষ দেবুর মা

জৈন্তাপুরে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু

জৈন্তাপুরে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু