২০২০-০৬-২০ ১৬:৩৩:৩৮ / Print
আমাদের সমাজে যার টাকা যত বেশি তার সন্মান ততো বেশি। যে কোনো অনুষ্ঠানে বিত্তশালী মানুষ গুণি মানুষের তুলনায় বেশি প্রাধান্য পায়। আমরা ভাবি টাকা দিয়ে ক্ষমতা কেনা যায়, সেখানে যোগ্যতা থাকুক আর না থাকুক।
এর ফলে প্রায় সব ধরণের অনুষ্ঠানে আমরা প্রকৃত প্রতিভাধর মানুষদের পরিবর্তে বেশি টাকার মালিককে প্রধান বা বিশেষ অথিতি হিসেবে দেখি। টাকা যে সম্মানের মানদণ্ড নয় সেটা এখন আমরা অবিশ্বাস করি না। বরং সেটাকেই সত্য বলে মেনে নিয়েছি।
এর কারণ হলো টাকা দিয়ে এখন মানুষ খুব সহজে ক্ষমতা কিনে সমাজে নিজের শক্তি ও অবস্থান পাকাপোক্ত করছে। আর সাধারণ মানুষরা ক্ষমতাধর মানুষদের পিছনেই বেশি থাকে, তাতে দীর্ঘমেয়াদে সমাজের কি লাভ ক্ষতি হচ্ছে তা কখনো মানুষ ভেবে দেখে না।
সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো, যে মানুষটির সন্মান ও মর্যাদাকে আমরা তার টাকা দিয়ে পরিমাপ করছি, সেই টাকা তিনি বৈধ বা অবৈধ কোন পথে উপার্জন করেছেন সেটি নিয়েও আমরা কখনো ভাবছি না।
এর ফলে সমাজে প্রকৃত মানবিক গুনের অধিকারী মানুষের সংখ্যা কমছে, বৈধ কিংবা অবৈধ যে কোনো ভাবে অর্থ সম্পদ অর্জন করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে বাড়ছে। আবার এই টাকা কত কম সময়ে অর্জন করে অন্যকে টাকার অংকে পিছনে ফেলা যায় তার প্রতিযোগিতাও মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
এ ধরণের আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসার পথ কি আমরা খুঁজছি নাকি সবটাকেই আমরা সাধারণভাবে দেখে ভবিষ্যত প্রজন্মকে মানবিক মানুষ হবার পরিবর্তে অর্থতান্ত্রিক দানব হিসেবে একটা অনিশ্চিত পথে ঠেলে দিচ্ছি। হয়তো সময় এর উত্তর দিবে যেমন- করোনা আমাদের এখন অনেক কিছুই শেখাচ্ছে। যা আমরা ছয় মাস আগেও ভেবে দেখিনি।
লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)