৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাত, পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রাতের আঁধারে ভাঙ্গার খাল নদীর পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু ভুলবসত: নদীর কিনারে ফেলে চলে যাওয়ায় গুংঘানির শব্দ শুনে প্রতিবেশী এক পুরুষ দ্রুত এগিয়ে ঐ বস্তার মুখ খুলে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মাইফুল নেছাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আবু তাহের জান্নাত ও তার সহযোগিতাকারীরা গা ডাকা দিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাত ৮টায় সময় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদালারপাড় গ্রামে মেয়ে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
মাইফুল নেছা উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে মাইফুল নেছার। অভিযুক্ত দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল মিয়ার ছেলে আবু তাহের জান্নাতের(২৮)।
এমন ঘটনার খবর পেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মো. শহিদুল ইসলাম ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন।
মাইফুল নেছার মা মমতা বেগম অভিযোগ করে বলেন, জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের বাদলার পাড় গ্রামের বাসিন্দা। আমার স্বামী কারী নিজাম উদ্দিন। গত ৮ মাস পূর্বে আমাদের মেয়ে মাইফুল নেছার(২৩)সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল মিয়ার ছেলে আবু তাহের জান্নাতের(২৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত শশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী ভোলাখালি গ্রামের এক ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সংসার করার পাশাপাশি পাশেরই একটি ঘরে পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করেন। যৌতুকের দাবি না মেটানোর কারণে গত মাস খানেক ধরে মাইফুলকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল আবু তাহের। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এর কিছু দিন পূর্বে বিষ খাইয়ে মেরেও ফেলতে চেয়েছিল। এনিয়ে বিচার শালিস বসে, বিচারে দোষীও হয় আবু তাহের।
পরে বিচারকগন একসপ্তাহ পর আবারও বিচারে বসবেন। এরপর গত কাল রাতে আমার মেয়ে আমার বাড়িতে টয়লেট গেলে মেয়ের স্বামী, শশুর ও দেবররা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাকে মুখ চেপে ধরে হাত, পা বেধেঁ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাশে ভাঙ্গার খাল নদীতে ফেলে দিলে আমার মেয়ের গুংগানির শব্দ শুনতে পেয়ে পাশের বাড়ির লোকজন নদী কিনারে পানি ও কাঁদা মধ্যে থাকা অবস্থায় বস্তার মুখ খুলে দেখে চিৎকার দিলেই সবাই জড়ো হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করি।
মাইফুল নেছার বোন জামাই আশু মিয়া (২৫) ও বড় ভাই ওবায়দুল্লাহ জানান,বিয়ের পর থেকেই তারা আমার বোনকে নির্যাতন করছিল। যৌতুকের ৫০হাজার টাকার দাবি মেটানোর পরও নির্যাতন বন্ধ করেনি। আজ হাত পা বেঁধে আমার বোনকে নদীতে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। আমি এর বিচার চাই। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আবু তাহের জান্নাত ও তার সহযোগিতাকারীরা পালিয়ে যাওয়া তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিলেট সান/এসএ
